কলকাতার একটি পুজো মণ্ডপে জনস্রোত। ছবি: পিটিআই।
মানুষ, মানুষ আর মানুষ। অষ্টমীর দুপুর থেকে কলকাতার যে দিকে চোখ পড়েছে, শুধুই মানুষের ভিড়। উৎসবের জনজোয়ারে ভেসেছে মহানগরী। ষষ্ঠী, সপ্তমীর তুলনায় রবিবার গাড়ির ভিড় তুলনামূলক কম। রাস্তায় গাড়ি ধীরে চললেও থমকে নেই। উত্তর থেকে দক্ষিণে যানজট ছিল মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। বড় পুজোগুলোয় ভিড় চোখে পড়ার মতো।
অষ্টমীর দুপুর থেকেই কলকাতার বিখ্যাত পুজোগুলোয় ভিড়। দক্ষিণে ত্রিধারা, দেশপ্রিয় পার্ক, চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সঙ্ঘকে ভিড়ে টেক্কা দিয়েছে উত্তরের আহিরীটোলা, সন্তোষ মিত্র পার্ক, টালা প্রত্যয়। তার প্রভাব পড়েছে রাস্তায়। দক্ষিণে রুবি থেকে রাসবিহারী পর্যন্ত রাস্তায় তীব্র যানজট। দর্শনার্থীদের রাস্তা পারাপারের কারণে মাঝেমধ্যে থমকে যাচ্ছে গাড়ি। রাসবিহারী ক্রসিংয়ে অন্য দিনের তুলনায় দ্বিগুণ সময় আটকে থাকতে হচ্ছে। মেট্রো থেকে হাজার হাজার মানুষ রাসবিহারী মেট্রো স্টেশনে নেমে ছড়িয়ে পড়ছেন চেতলা অগ্রণী, বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ থেকে হিন্দুস্তান পার্ক, ত্রিধারা সম্মিলনী। সে কারণে রাসবিহারী মোড়ে তীব্র যানজট।
রবিবার বিকেলে সন্ধিপুজো দেখতে বনেদী বাড়িগুলিতে ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। বিশেষ সন্ধিক্ষণে ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবীর আরাধনা করা হয়। তা দেখতে জানবাজারে রানি রাসমণির বাড়িতে জড়ো হয়েছিলেন অন্তত হাজার জন। শোভাবাজার রাজবাড়িতেও সে সময় ছিল জনজোয়ার। অনেকে আবার কলুটোলা স্ট্রিটে বদন রায়ের বাড়ি, সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে বদন রায়ের বাড়ি, পটলডাঙার বসুমল্লিকদের বাড়ির পুজোয় ভিড় করেছেন। সন্ধিপুজোর সাক্ষী থাকবেন বলে।
বনেদী বাড়ির পাশাপাশি উত্তর এবং দক্ষিণের পুজো মণ্ডপগুলিতেও সন্ধিপুজো দেখার জন্য ভিড় করেছিলেন বহু মানুষ। বাকি দিনের মতো ভিড় রয়েছে উত্তরের বাগবাজার সার্বজনীন, লেকটাউনের শ্রীভূমির পুজোয়। শ্রীভূমির পুজোর কারণে ধীরে গাড়ি চলছে উল্টোডাঙা থেকে বিমানবন্দরগামী রাস্তায়। এ দিকে মহাষ্টমীতেও ভিড় সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সেখানে ঠাকুর দেখতে গেলে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় এক ঘণ্টা। মাঝে মধ্যে সেই সময় বেড়ে দেড় ঘণ্টাও হয়েছে। কম যায় না টালা প্রত্যয়। সেখানে গিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দর্শনার্থীদের প্রায় ২৪ মিনিট লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। দক্ষিণে সুরুচি সঙ্ঘেও একই অবস্থা। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঠাকুর দেখতে গিয়ে প্রায় ৩৭ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে দর্শনার্থীদের। দেশপ্রিয় পার্কে ওই সময় ১৪ মিনিট, ত্রিধারায় ১২ মিনিট করে লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। সিংহী পার্কে ১৫ মিনিট, একডালিয়ায় ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে। উত্তরে আহিরীটোলা, কুমারটুলি পার্ক, চালতা বাগান, চোর বাগানে তুলনামূলক কম সময়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর থেকে দক্ষিণ সব রাস্তাতেই ধীরে চলছে গাড়ি। তবে থমকে নেই।