হৃদয় সাহা
বাবা ফুল বিক্রি করেন। মা গৃহবধূ। অনটন নিত্যসঙ্গী। কিন্তু চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নকে ম্লান হতে দেয়নি সে। মাধ্যমিকে ৭০০-র মধ্যে ৬৫৭ নম্বর (৯৩.৮৬ শতাংশ) পেয়ে সেই স্বপ্নকে আরও মজবুত করল রহড়ার রামকৃষ্ণ মিশন বয়েজ় হোম হাই স্কুলের ছাত্র হৃদয় সাহা।
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ওই স্কুলেই পড়ছে হৃদয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী মুরলীধরানন্দ জানান, দুঃস্থ ছাত্র হিসাবে ভর্তি হয়েছিল সে। প্রথম থেকেই সে পড়াশোনায় মনোযোগী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আশা ছিল ও ভাল ফল করবে। তবে এত ভাল হবে ভাবতে পারিনি। ওর পরিশ্রমের ফলেই এই সাফল্য। ভবিষ্যতে ওর পড়াশোনার জন্য সব রকম সাহায্য করব।’’
তবে স্কুল পাশে না থাকলে এত ভাল ফল হত না বলেই জানিয়ে দিল হৃদয়। সে বলে, ‘‘আমরা আশ্রমে থাকতাম। ফলে করোনার সময়েও স্যারেরা পড়া বুঝিয়ে দিয়েছেন। প্রস্তুতিতে অসুবিধা হয়নি।’’
হৃদয় জানায়, চিকিৎসক হওয়ার পথে স্কুল থেকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছে। একাদশ থেকে আশ্রমে নয়, হৃদয়কে থাকতে হচ্ছে মেসে। স্কুলের কাছেই মেসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্কুলের তরফে।
হৃদয়েরা থাকে মছলন্দপুরে। সেখান থেকে সোদপুরে ফুল বিক্রি করতে আসেন বাবা বিষ্ণু সাহা। হৃদয়ের মা সুষমারানি সাহা বলেন, ‘‘স্বামীর দোকান করার মতোও পুঁজি নেই। ফুটপাতেই ফুল বিক্রি করেন। কিন্তু ছেলের পড়াশোনা যেন আটকে না যায়, সেই চিন্তা থাকে সব সময়ে। স্কুলের সব শিক্ষকেরা ছেলের পাশে রয়েছেন, এটাই বড় ভরসা।’’ স্বামী মুরলীধরানন্দ বলেন, ‘‘হৃদয়েরসাফল্য আশ্রমের সম্মান বৃদ্ধিকরেছে। এই সাফল্য অন্যান্য ছাত্রদের উৎসাহ দেবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।