ফাঁকা: ক্রেতার অপেক্ষায়। শনিবার, হাওড়ার ডুমুরজলার বাজি বাজারে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
তিন দিনের একটানা বৃষ্টিতে কলকাতার মতোই বেহাল দশা হাওড়ার বাজি বাজারের। জল-কাদায় ভরে গিয়েছে স্টলের আশপাশ। তার উপরে বৃষ্টির জেরে বাজির বাজারে ক্রেতাদেরও এই ক’দিন দেখা মেলেনি। সব মিলিয়ে কালীপুজোর মুখে বেশ বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হলেন বাজি বাজারের ব্যবসায়ীরা।
হাওড়ার ডুমুরজলায় বসেছে বাজির বাজার ‘বাজিমেলা’। ব্যবসায়ীরা জানান, গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে ডুমুরজলার হকিমাঠে যেখানে ২০০টি স্টল নিয়ে বাজিবাজার হয়েছে, সেখানে এক হাঁটু জল জমে গিয়েছে। জল বার করতে নালা খোঁড়া হয়েছে। তার জেরে জল এবং কাদায় গোটা মাঠের ভয়াবহ অবস্থা।
বাজি বাজারের ওই পরিস্থিতির জন্য শুক্রবার রাতেই মেলা কমিটির লোকজনের সঙ্গে প্রকাশ্যে গোলমাল বেধে যায় বাজি ব্যবসায়ীদের। খবর পেয়ে সেখানে যান হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) স্বাতী ভাঙালিয়া। তিনি নির্দেশ দেন, যাঁরা মাঠের স্টলে বসতে চাইবেন না, তাঁরা স্টেডিয়ামের রিং রোডের ধারে স্টল করে বসতে পারবেন। সেই মতো শনিবার সকাল থেকেই বাঁশ, ত্রিপল, প্লাস্টিক নিয়ে বাজি বিক্রির অস্থায়ী স্টল তৈরি করেন ব্যবসায়ীরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে ব্যবসা না জমায় তাই বেকায়দায় পড়েছেন বিক্রেতারা। শনিবার বাজি মেলায় গিয়ে দেখা গেল করুণ মুখে বসে আছেন হাওড়ার চেঙ্গাইলের বাসিন্দা, ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা শাহজাদি বেগম। মন খারাপ শেখ নাজির, শুভ হাজরা, শ্রাবণী ভুঁইয়ার মতো বাজি ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, শুক্রবার পর্যন্ত বাজির বাক্স খুলতেই পারেননি। শাহজাদির কথায়, ‘‘ঘরের জিনিসপত্র বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকার বাজি কিনেছি। সাড়ে আট হাজার টাকা স্টলের ভাড়া দিয়েছি। এক জন ক্রেতাও নেই। তিন দিনের টানা বৃষ্টি সব শেষ করে দিল।’’
উলুবেড়িয়ার ধুলসিমলা থেকে আসা অপর এক বিক্রেতা পলাশ কর্মকারের অভিযোগ, ‘‘গত বছর পুরসভার বাজি বাজারের ব্যবস্থাপনা অনেক ভাল ছিল। এখানে শুধু কমিটির লোকজনই ভাল জায়গা বেছে নিয়েছেন।’’
যদিও অভিযোগ সত্যি নয় বলেই দাবি ডুমুরজলা বাজি মেলার সম্পাদক সৌমিত্র মণ্ডলের। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ ঠিক নয়। জল নামার পরে প্রত্যেক স্টলের সামনেই বালি ফেলা হয়েছে। এমনকি, মূল রাস্তায় ইটও বসানো হয়েছে। এখন আবহাওয়ার উন্নতি হলে কালীপুজোর দিন বাজি ভাল বিক্রি হবে বলেই মনে হয়।’’