খালে ভেঙে পড়েছে ঘর। বৃহস্পতিবার, বাগুইআটির অর্জুনপুরে। নিজস্ব চিত্র
খাল সংস্কারের কাজ চলাকালীন বৃহস্পতিবার ভোরে আচমকাই খালপাড়ের একটি ঘরের একাংশ ভেঙে পড়েছে জলে। সেই সঙ্গে আরও একাধিক ঘরে ধরেছে ফাটল। যার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাগুইআটিতে অর্জুনপুর খাল সংলগ্ন তরুণপল্লিতে এই ঘটনা ঘটেছে।
এ দিন সকালে খবর পেয়ে সেখানে যান সেচ দফতর এবং পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। পুরসভা ও সেচ দফতর সূত্রের খবর, মোট ১৮টি ঘর কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে আটটি ঘর বেশি রকম ক্ষতিগ্রস্ত। একাধিক ঘরে ফাটল ধরেছে। সেই সব ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হয়েছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভা জানিয়েছে, তারাও একটি রিপোর্ট সেচ দফতরকে পাঠাচ্ছে। প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
একটি ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের সদস্য সুব্রত ঘোষ জানান, তাঁর বাবা পেশায় রিকশাচালক। অনেক কষ্ট করে ঘর তৈরি করেছিলেন। এই অবস্থায় কী ভাবে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে, তা নিয়েই চিন্তায় গোটা পরিবার। তাঁর দাবি, খাল সংস্কারের কাজের জেরেই ঘরগুলিতে ফাটল ধরেছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আগে খাল সংস্কারের কাজ কর্মীরা নিজেদের হাতে করতেন। এখন জেসিবি যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা জানানো হলেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়নি।
বাসিন্দারা জানান, তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। স্থানীয় বিজেপি নেতা স্বপন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ সব ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় বাসিন্দাদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তা-ও করা হয়নি।’’ যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরীর স্বামী, তৃণমূল নেতা রাজীব চৌধুরী জানান, সাময়িক ভাবে অন্যত্র সরে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও বাসিন্দারা রাজি হননি। প্রয়োজনীয় সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। আর কস্তুরী জানান, প্রশাসন বাসিন্দাদের পাশেই রয়েছে। প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া-সহ সব রকম সহযোগিতা করা হবে। আপাতত ক্ষতিগ্রস্তদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সেচ দফতরের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা করেই কাজ করা হবে।