স্বাস্থ্য ভবনে ‘দোষ কবুল’ হাসপাতালের

গত বুধবার মোটরবাইক দুর্ঘটনায় আহত হন হাওড়ার বাসিন্দা নীলোৎপল চক্রবর্তী নামে বছর আটত্রিশের এক যুবক। তাঁর বাঁ হাতের অনামিকার কিছুটা অংশ ছিন্ন হয়ে যায়। অস্ত্রোপচারের জন্য ওই দিনই তাঁকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ০২:১১
Share:

সিএমআরআই হাসপাতাল।—ছবি সংগৃহীত।

ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে লিখতে না চাইলেও স্বাস্থ্য ভবনে কাটা আঙুলের অংশ হারিয়ে ফেলার ঘটনাটি স্বীকার করেছে সিএমআরআই হাসপাতাল। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী শনিবার এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘নিজেদের মতো করে তদন্ত করার পরে সিএমআরআই হাসপাতাল আমাদের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তাতে আঙুলের কাটা অংশ হারিয়ে ফেলার ঘটনায় দোষ স্বীকার করেছে ওরা। আমরা এ বার সবটা হেল্থ রেগুলেটরি কমিশনে পাঠিয়ে দেব। ওই রোগীর পরিবার কী ক্ষতিপূরণ চাইছে, সেটা দেখা হবে।’’

Advertisement

গত বুধবার মোটরবাইক দুর্ঘটনায় আহত হন হাওড়ার বাসিন্দা নীলোৎপল চক্রবর্তী নামে বছর আটত্রিশের এক যুবক। তাঁর বাঁ হাতের অনামিকার কিছুটা অংশ ছিন্ন হয়ে যায়। অস্ত্রোপচারের জন্য ওই দিনই তাঁকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকাল ন’টায় অস্ত্রোপচার করা হবে। কিন্তু অস্ত্রোপচারের সময়ে দেখা যায়, আঙুলের ওই অংশটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ওই কাটা অংশ তাঁরা হারিয়ে ফেলেছেন। আলিপুর থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করে রোগীর পরিবার।

শুক্রবার রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট লেখা নিয়ে গণ্ডগোল হয়। ফের আলিপুর থানা থেকে পুলিশ যায় মধ্যস্থতার জন্য। নীলোৎপলের স্ত্রী চয়নিকার অভিযোগ, ‘‘হাসপাতাল ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে আঙুলের কাটা অংশ হারিয়ে ফেলার কথা লেখেনি।’’ এ নিয়ে রাত পর্যন্ত টানাপড়েনের পরেও হাসপাতাল রাজি না হওয়ায় রোগীকে ডিসচার্জ করিয়ে সোজা থানায় যায় রোগীর পরিবার। সেখানে ফের হাসপাতালের বিরুদ্ধে আঙুলের কাটা অংশ হারিয়ে ফেলার এবং ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে ওই ঘটনার উল্লেখ না করার জন্য অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।

Advertisement

এই ঘটনায় রোগীদের পরিবারের প্রতি হাসপাতালগুলির দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন বাড়ি থেকে নীলোৎপল ফোনে বলেন, ‘‘এত বড় বড় বেসরকারি হাসপাতাল চলছে শহরে, কিন্তু রোগীদের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতা নেই কেন? বারবার এ রকম ঘটলেও কিছুই বদলাচ্ছে না!’’ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের অনেকেরই আবার দাবি, শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির উপরে সে ভাবে কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই স্বাস্থ্য ভবনের। নীলোৎপলের ঘটনার পরে কি পরিস্থিতি বদলাবে? স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়বাবু বলেন, ‘‘কর্তব্যে গাফিলতি যে কারও হতে পারে। কিন্তু জীবন নিয়ে যখন এগুলো হচ্ছে, তখন বিষয়টিকে অত হাল্কা ভাবে নেওয়া যায় না। গুরুত্ব দিয়েই দেখা হবে। তার পরে যা পদক্ষেপ করার করতে হবে।’’ এ বিষয়ে এ দিনও সিএমআরআই-এর তরফে কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement