প্রতীকী ছবি।
একের পর এক নিম্নচাপে বিপর্যস্ত ফুল চাষ। অধিকাংশ বাগান এবং নার্সারিতে বৃষ্টির জল জমে যাওয়ায় ফুল গাছের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। এই কারণেই বাজারে জোগান কমছে ফুলের। চাষিদের আশঙ্কা, এ ভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে চাহিদা অনুযায়ী পুজোয় ফুলের জোগান দেওয়া সম্ভব হবে না।
ফুলচাষিদের মতে, এমনিতেই পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বেশ কয়েকটি জেলার ফুল চাষ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসে’ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই সব জেলার ফুলই প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন বাজারে আসে। ইয়াসের ক্ষতি সামলাতে ফুলচাষিরা ঋণ নিয়ে চাষ শুরু করলেও বাদ সেধেছে পর পর নিম্নচাপ। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টিতে কিছু জায়গায় তো আবার বন্যা পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। ওই সব জেলার অনেক ফুলের বাগান জলের নীচে চলে গিয়েছে। ‘সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, “চলতি মাসে পর পর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চাষিরা দিশাহারা। দুর্গাপুজো ছাড়াও পর পর কয়েকটি পুজো সামনে রয়েছে। ওই সময়ে পদ্ম, রজনীগন্ধা, গাঁদা, দোপাটি, অপরাজিতা, গোলাপ প্রভৃতি ফুলের জোগানের খুব ক্ষতি হবে। ফলে দাম বাড়ার আশঙ্কাও থাকছে।”
আর এক ফুলচাষি গৌরীশঙ্কর ঘাটা জানাচ্ছেন, বিশ্বকর্মা পুজোর সময়েও ফুলের দাম বেড়েছিল। বাজারে ফুলের আমদানি তখন কম থাকলেও কোনও রকমে সামলে নেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু পুজোর দীর্ঘ মরসুমে কী ভাবে ফুলের জোগান ঠিক রাখা হবে, এ নিয়েই তাঁরা চিন্তিত। বিক্রেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে হয় বাজার বন্ধ, না হলে মন্দা। এই দুইয়ের সঙ্গে গত প্রায় দু’বছর ধরে যুঝে যাচ্ছেন চাষিরা। এ বার পুজোর আগে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় পুজোয় ফুলের চাহিদা বাড়বে ভেবে লাভের আশা করেছিলেন তাঁরা।
নারায়ণবাবু জানাচ্ছেন, পুজোর পরে শীতকাল ফুলের মরসুম। কিন্তু এত ক্ষতির পরে নতুন করে শীতের ফুল চাষ করতে গেলে সরকারি সাহায্য প্রয়োজন। এ জন্য তাঁরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রী সুব্রত সাহাকে ইমেল করে স্মারকলিপি দিয়েছেন।