ছাড়পত্র ছাড়া ‘মদ বিক্রি’ হুকা বারে

ইদানীং জন্মদিনের পার্টি, বিবাহ-বার্ষিকীর অনুষ্ঠান বা অফিস-পার্টিতে অনেকেই চান মদ্যপানের আয়োজন করতে। সেই মতো যাঁর অনুষ্ঠান, তিনি সরাসরি আবগারি দফতরের কাছে অনুমতি চান। যেখানে অনুষ্ঠান হবে, সেখানকার মালিকের কাছ থেকে ‘নো-অবজেকশন’ সার্টিফিকেট নিতে হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৪০
Share:

মদ বিক্রির ছাপানো তালিকাও ছিল ওই হুকা বারে। নিজস্ব চিত্র

ইদানীং জন্মদিনের পার্টি, বিবাহ-বার্ষিকীর অনুষ্ঠান বা অফিস-পার্টিতে অনেকেই চান মদ্যপানের আয়োজন করতে। সেই মতো যাঁর অনুষ্ঠান, তিনি সরাসরি আবগারি দফতরের কাছে অনুমতি চান। যেখানে অনুষ্ঠান হবে, সেখানকার মালিকের কাছ থেকে ‘নো-অবজেকশন’ সার্টিফিকেট নিতে হয়।

Advertisement

সাধারণ রেস্তোরাঁ বা ভাড়া দেওয়ার ছোট হলে এই সব উৎসব-অনুষ্ঠানে এক দিনের জন্য মদ সরবরাহের অনুমতিও দেয় আবগারি দফতর। একে ‘সার্ভিস পারমিশন’ বলা হয়। ইদানীং সেই সুযোগের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠছে। রাজ্য আবগারি দফতরের কলকাতার কালেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানিয়েছেন, অতিথিদের মদ খাওয়ানোর নাম করে আসলে মদ বিক্রি করা হচ্ছে কিছু জায়গায়।

গত শুক্রবার রাতে এমনই এক অভিযোগ পেয়ে এজেসি বসু রোডে একটি হুকা বারে হানা দেন আবগারি অফিসারেরা। আবগারি অফিসারদের উপস্থিতি আগে থেকে টের পেয়ে ওই বারের কর্মীরা পিছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যান বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই হুকা বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। সেখান থেকে দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে ২০ লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই হুকা বারের মালিকের নামে মামলা শুরু করেছে আবগারি দফতর। সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, এই হুকা বারটির অবশ্য সেই দিনের জন্য সার্ভিস পারমিশন-ও ছিল না। একেবারে বেআইনি ভাবে সেখানে মদ বিক্রি হচ্ছিল। এমনকী বিভিন্ন ধরনের মদের দামের একটি ছাপানো তালিকাও পাওয়া গিয়েছে ওই হুকা বার থেকে। যার থেকে আবগারি অফিসারদের ধারণা, নিয়মিত মদ বিক্রি হতো সেখানে।

Advertisement

সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, ‘সার্ভিস পারমিশন’-এর এই অপব্যবহারের খবর পেয়ে তাঁরা এ বার থেকে অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ কার্ডও চেয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শুধু আবগারি দফতরকে দেওয়ার জন্য অনেকে ওই একটি মাত্র কার্ড ছাপাচ্ছেন। সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘বেশ কিছু রেস্তোরাঁ নিজেদের কর্মীদের দিয়ে আবগারি দফতরে আবেদন করিয়ে এক দিনের জন্য সার্ভিস পারমিশন নিচ্ছে এবং সে দিন দেদার মদ বিক্রি করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’’

কিন্তু এক দিন মদ বিক্রি করে কী লাভ হচ্ছে ওই সব হুকা বার বা রেস্তোরাঁর? জানা গিয়েছে, মাসে ২-৩ দিন ওই সার্ভিস পারমিশন নিলেও তার আড়ালে মদ বিক্রি করছে তারা। সুব্রতবাবুর অভিযোগ, সাধারণ কোনও মানুষ আচমকা সেখানে ঢুকে মদ চাইলে পাবেন না। এদের নিয়মিত কিছু গ্রাহক থাকেন, যাঁরা সেখানে আসেন। লুকিয়ে-চুরিয়ে তাঁদেরই মদ বিক্রি করা হয়। এই সব রোস্তোরাঁ বা হুকা বারকে যেহেতু আবগারি কর দিতে হয় না, সস্তায় ডিউটি ফ্রি বিদেশি মদ জোগাড় করে তারা, তাই গ্রাহকেরাও বাইরের বারের চেয়ে সস্তায় মদ পান এখানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement