ছবি সংগৃহীত।
অল্প সংখ্যক পড়ুয়া থাকায় ধর্মঘটের দিন মিড ডে মিলের পরে আর ক্লাস হল না হিন্দু স্কুলে। তার বদলে পড়ুয়ারা সবাই মিলে স্কুলের প্রেক্ষাগৃহে দেখল সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজা দেশে।
বুধবার ধর্মঘটের জেরে কলকাতা জুড়েই সরকারি স্কুল, সরকার পোষিত স্কুল, বা আইসিএসই বা সিবিএসই স্কুলগুলোয় পড়ুরার সংখ্যা ছিল কম।
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানান, কাছাকাছির বাসিন্দা পড়ুয়ারাই মূলত স্কুলে আসতে পেরেছিল। ফলে ঠিক হয় এ দিন পুরো পিরিয়ড ক্লাস না করে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখানো হবে।
সম্প্রতি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পরে শহরে যে মিটিং মিছিল হচ্ছে তাতে হীরক রাজার দেশের ছবির বিভিন্ন সংলাপ স্লোগান আকারে ফেস্টুনে লেখা হচ্ছে। হীরক রাজার দেশের গান ‘কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়’ শোনা যাচ্ছে কোরাসে গাইছেন মিছিলে অংশগ্রহণকারী পড়ুয়ারা।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই কি এই সিনেমা দেখানোর জন্য বাছা হল?
শুভ্রজিৎবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘তেমন কিছু নয়। এমন একটি সিনেমার কথা ভাবা হয়েছে যেটি শুধুই ছাত্রদের নয়, শিক্ষকদেরও দেখতে ভাল লাগে। সবার ভাল লাগার ছবি। তাই ঠিক করি হীরক রাজার দেশ বাছা হয়।’’ শুভ্রজিৎবাবু অবশ্য জানান, তাঁদের স্কুলে মাঝেমধ্যেই ছোটদের ছবি দেখানো হয়।
এ ভাবে হঠাৎ করেই সিনেমা দেখতে পেরে খুশি পড়ুয়ারাও। সপ্তম শ্রেণির কয়েক জন পড়ুয়া জানায়, হীরক রাজার দেশে ছবিটি তারা আগে টিভিতে দেখেছে। তাদের অনেকেরই পছন্দের দৃশ্য দড়ি ধরে টেনে রাজার মূর্তি উপড়ে ফেলার দৃশ্যটি।
দক্ষিণের যাদবপুর বিদ্যাপীঠে এ দিন ছাত্র সংখ্যা কম থাকায় কয়েকটি শ্রেণির সব কয়টি সেকশনের পড়ুয়াদের একসঙ্গে বসিয়ে ক্লাস করানো হয়। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ছাত্র কম বলে আমাদের স্কুলে পড়াশোনা ব্যাহত হয়নি। শিক্ষকেরা সবাই এসেছেন। ছাত্র কম থাকায় সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির সব সেকশনের পড়ুয়াদের একসঙ্গে করে ইংরেজি ক্লাস, বাংলা ব্যাকরণ ক্লাস নেওয়া হয়েছে।’’
আইসিএসই বা সিবিএসই বোর্ডের স্কুলগুলোতেও এ দিন পড়ুয়াদের সংখ্যা ছিল কম। লেক গার্ডেন্স এলাকার স্কুল রামমোহন মিশন হাই স্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্কুলগাড়ি না চলায় বেশির ভাগ পড়ুয়া আসেনি। তবে কম ছাত্র নিয়েই পুরো ক্লাস হয়েছে।’’ সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পক্ষে কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল বাস চলেছে প্রতিদিনের মতোই। কিন্তু তবু পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল বেশ কম।’’