—প্রতীকী চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিকে ১৩টি বৃত্তিমূলক বিষয়ের সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্যেও পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন হবে। সেই পরিবর্তিত পাঠ্যক্রম দ্রুত প্রকাশ করা হবে বলে রবিবার জানালেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘বৃত্তিমূলক বিষয়গুলি পরিচালনা করে কারিগরি শিক্ষা দফতর। ওই দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্য বৃত্তিমূলক ১৩টি বিষয়ের পরিবর্তিত পাঠ্যক্রম তাঁরা আমাদের দেবেন। ওই পরিবর্তিত পাঠ্যক্রমটি পর্যালোচনা করে প্রকাশ করা হবে এবং সেই অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরে বই এবং মডেল প্রশ্নও প্রকাশ করা হবে।’’
প্রসঙ্গত, উচ্চ মাধ্যমিকে মোট ৬২টি বিষয়ের মধ্যে বৃত্তিমূলক বিষয় রয়েছে ১৩টি। কিছু দিন আগে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্য ৪৯টি বিষয়ের পাঠ্যক্রমের পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করলেও বৃত্তিমূলক বিষয়গুলির পাঠ্যক্রমের কথা আগে জানায়নি। কারণ, ওই বৃত্তিমূলক বিষয়গুলি কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীনে। ওইসব বিষয়ের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে রাজ্যের বিভিন্ন সরকার ও সরকার পোষিত ৯১টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে কারিগরি দফতরের অধীনে ইনফরমেশন টেকনোলজি, রিটেল, হেল্থ কেয়ার এবং সিকিয়োরিটি বিষয়ের পঠনপাঠন শুরু হয়। পরে ৭২৬টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে আরও ন’টি বৃত্তিমূলক বিষয়— ইলেক্ট্রনিক্স, প্লাম্বিং, কনস্ট্রাকশন, অটোমোবাইল, অ্যাপারেল, টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি, বিউটি অ্যান্ড ওয়েলনেস, এগ্রিকালচার ইত্যাদি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ানো শুরু হয়। এই সব বিষয়গুলি ‘ন্যাশনাল স্কিলস কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ (এনএসকিউএফ) বিভাগের অন্তর্গত। এর পরে বর্তমান শিক্ষাবর্ষে আরও কয়েকটি স্কুলে আরও কয়েকটি নতুন বিষয়ে পঠনপাঠন শুরু হয়।
পশ্চিমবঙ্গ এনএসকিউএফ শিক্ষক পরিবার সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক শুভদীপ ভৌমিকের অভিযোগ, বৃত্তিমূলক শিক্ষার পাঠ্যক্রমের শেষ বদল হয় ২০১৯ সালে। তবে সেই ২০১৯ সাল থেকে ছাত্রছাত্রীরা পরিবর্তিত পাঠ্যক্রমের পাঠ্যপুস্তক পায়নি। এই অবস্থায় এই সব বিষয় নিয়ে যারা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়ছে, তারা কী ভাবে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা দেবে এবং পাঠ্যক্রমের আদৌ পরিবর্তন হবে কি না— তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পড়ুয়ারা। দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শিক্ষকেরাও। শুভদীপ বলেন, ‘‘সিমেস্টার অনুযায়ী পরিবর্তিত পাঠ্যক্রম ও দ্রুত বই প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি। না হলে পড়ুয়ারা কী ভাবে প্রস্তুতি নেবে? সেই সঙ্গে আমাদের দাবি, আমাদের কারিগরি দফতরের অধীনে নয়, শিক্ষা দফতরের অধীনে আনা হোক। কারিগরি বিষয়ের শিক্ষকদের স্থায়ীকরণ করা হোক। তাহলেই আমাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।’’