ফাইল ছবি
আইনি জটিলতা কেটেও কাটছে না। হাই কোর্ট ব্রুনোকে তার মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিকেল ৫টার মধ্যে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ৫টা বেজে গেলেও তাকে ফেরত দেয়নি দেবশ্রী রায়ের সংস্থা অ্যানিম্যাল ফাউন্ডেশন। আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে আবার হাই কোর্টের দারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন মামলাকারী।
১৪ জানুয়ারি বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ফ্রেঞ্চ ম্যাসটিফ প্রজাতির কুকুর ব্রুনো। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। গ্রল্ফগ্রিনের বাসিন্দা মামলাকারী সুকন্যা মীরবাহারের দাবি, গত আড়াই বছর ধরে কুকুরটি তাঁদের পরিবারে রয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন বাদে হাওড়া থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। জানা যায় পাঁচলা থানার সামনে থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে তাকে পাঁচলা থানাতেই রাখা হয়। কিন্তু ব্রুনোকে সামলাতে না পেরে তাকে পুলিশ তুলে দেয় দেবশ্রী রায়ের সংস্থা অ্যানিমেল ফাউন্ডেশনের হাতে। সুকন্যা মীরবাহার কুকুরকে ফেরত চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন। পরে এই মামলায় যুক্ত করা হয় দেবশ্রী রায়ের ফাউন্ডেশনকে। তারা সুকন্যাকে ব্রুনোর অভিভাবক বলতে নারাজ।
কুকুরটি সুকন্যা মীরবাহারের কি না তা জানার জন্য বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ব্রুনোর চিকিৎসককে তা দেখতে নির্দেশ দেন এবং আদালতকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। কিন্তু চিকিৎসক আদালতে যে রিপোর্ট দেন তাতে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি।
এর পর আদালত সুকন্যা মীরবাহারকে ফাউন্ডেশন যেতে বলে। জানায়, তাঁকে দেখে দেখে যদি ব্রুনোর আচারণ সদর্থক মনে হয় তবে আদালত পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। আদালতের নির্দেশ মতো সেই দেখা করার ছবিও শুনানির সময় পেশ করা হয়।
সেই ছবি দেখে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, কোনও পশুর প্রকৃত অভিভাবককে তা জানা আদালতের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে পশুদের যাতে ক্ষতি না হয় এবং তারা যাতে ভালভাবে লালিত-পালিত হয় সে দিকে আদালত নজর দেবে। যেহেতু সুকন্যা কুকুরটি পালন করতে চাইছেন তাকে ব্রুনোকে দিতে সমস্যা কোথায়!
এর পরই বিচারপতি নির্দেশ দেন বিকালে ৫টার মধ্যে ব্রুনোকে ফিরিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে এই সময়কালে ব্রুনোকে দেখাশোনার জন্য যা খরচ হয়েছে অ্যানিম্যাল ফাউন্ডেশনের তা দিতে হবে। বিচারপতি নির্দেশ দেন মাসে একবার করে ফাউন্ডশেনকে সুকন্যা মীরবাহার বাড়িতে গিয়ে দেখে আসতে হবে কুকুরটি কেমন আছে।
আদালতের এই নির্দেশে খুশির ছোঁয়া নামে সুকন্যার পরিবারে। কিন্তু সেই খুশি নিমেষেই মিলিয়ে যায়। কারণ, আপাতত কুকুরটি ছাড়ছে না অ্যানিম্যাল ফাউন্ডেশন। তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে। আদালতের দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী কুকুরটিকে আনতে গিয়েছেন মামলাকারী। কিন্তু এই খবর লেখা পর্যন্ত ফাউন্ডেশনের তরফ এখনও সেটি হস্তান্তর করা হয়নি। আদালত সময় দিয়েছিল বিকেল ৫টা। এখন মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমার মক্কেল অপেক্ষা করছেন। না পেলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। এটা আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে।’’