বেহালা ব্লাইন্ড স্কুলের মাঠে বসেছে বাজি বাজার। ছবি: অরুণ লোধ।
গত বছর শহিদ মিনারের বাজারে ৮০টি স্টল করেও খালি ছিল ২৪টি। এ বছরে তাই ৬০টি স্টল হচ্ছে। টালা সার্কাস ময়দানের বাজারে যোগ দিচ্ছেন নর্থ ডিভিশনের ৯টি থানা-সহ ইস্ট সাবারবান ডিভিশনের সাতটি থানার অন্তর্গত নথিভূক্ত ব্যবসায়ীরা। গত বছরের মতোই ৪০টি স্টল থাকছে। বেহালার বাজারে স্টল সংখ্যা ৭৪ থেকে নেমে হচ্ছে ৫০। ৫২টি স্টল করেও ৪৫টি স্টল বুক হয়েছে যাদবপুরের বাজি বাজারে। সংখ্যাটা আগের বছর ছিল ৬০।
কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে শহরের সংগঠিত চারটি বাজি বাজারের দু’টি বসছে বেহালার ব্লাইন্ড স্কুলের মাঠে এবং যাদবপুরের কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে। এই দু’টির সূচনা হয়েছে গত কাল। বাকি দু’টির একটি শহিদ মিনারের সামনে, অন্যটি উত্তরের টালা সার্কাস ময়দানে বসে। এই দু’টির সূচনা হবে আজ। সব ক’টি বাজারই চলবে ২৩ তারিখ পর্যন্ত।
কিন্তু স্টল সংখ্যা কমছে কেন? বাজি বাজারের কর্মকর্তাদের মতে, বাজারের বাইরে বাজি বিক্রি এর কারণ। যাদবপুর বাজি বাজারের সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ মজুমদার জানান, পুজোর চার দিন আগে থেকে যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড এলাকার সেন্ট্রাল রোড, সুলেখার মোড়, বাঘাযতীন মোড়, গড়িয়ার মোড়, কসবা মার্কেট-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঢালাও বাজি বিক্রি হয়েছে। শহিদ মিনার বাজি বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, প্রতি বছরই ব্রেবোর্ন রোড জুড়ে বাজি বিক্রি হয়। উত্তর ও পূর্ব কলকাতার যত্রতত্র অবৈধ বাজি বিক্রির কথা মানছেন, নর্থ কলকাতা বাজি বাজারের সভাপতি সঞ্জয়কুমার দত্ত। সেনাকে দেওয়া চড়া ভাড়া শহিদ মিনার বাজি বাজারে স্টল কমে যাওয়ার অন্য কারণ বলে মনে করছে ‘বড়বাজার ফায়ার ওয়ার্কস অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি ইন্দ্রজিৎ বুদ্ধিরাজা।
ব্যবসায়ীদের মতে, কলকাতা পুলিশ নিরাপত্তার খাতিরে যত্রতত্র বাজি বিক্রি বন্ধে এবং নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি রুখতে সংগঠিত বাজারের পরিকল্পনা করে। কিন্তু কোণঠাসা অবস্থা সেই বাজারের ব্যবসায়ীদেরই। ফলে প্রশ্নের মুখে বাজি বাজারের কার্যকারিতা। তাহলে কি এর থেকে শহরে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি রমরমাই প্রমাণ হচ্ছে? যদিও বাজি বাজারের ব্যর্থতা মানতে নারাজ কলকাতা পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “শহরের চারটি বাজি বাজারের বাইরে বাজি বিক্রি করতে পারবেন না নথিভূক্ত ব্যবসায়ীরাও। এই নিয়ম মানা না হলে বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে বাজি-হকারদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করার জন্য আরও পুলিশকর্মী প্রয়োজন।”
বিক্রিতে ঘাটতি সত্ত্বেও বাটারফ্লাই, মিউজিক পার্টি, গ্রেপস গার্ডেন, ট্রয় ২৫, অবতার ৫০ এমন হরেক বাজির পসরা নিয়ে সেজে উঠছে শহরের চারটি বাজি বাজার। লালবাজারের এক আধিকারিকের মতে, নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সবার আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।