স্বাস্থ্য ফিরবে কবে, তারই প্রতীক্ষায় শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতু। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
প্রথম পর্যায়ে শহরের যে আটটি সেতুর ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ শুরু হয়েছে, তার প্রাথমিক রিপোর্ট চলতি মাসের শেষে জমা পড়তে পারে। কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) সূত্রে খবর, এর পরেই সেতু সারাইয়ের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, সেই ধারণা পাওয়া যাবে। সংস্থার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষে এ জন্য বৈঠকও ডাকা হয়েছে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, অরবিন্দ সেতু, বিদ্যাপতি সেতু, উল্টোডাঙা উড়ালপুল, চিংড়িঘাটা উড়ালপুল, বাঘা যতীন উড়ালপুল, বিজন সেতু, কালীঘাট সেতু ও বঙ্কিম সেতুর প্রথম পর্যায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সংস্থা এ কাজে একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগ করেছে। সেই সংস্থাগুলি প্রতিদিন যে রিপোর্ট দিচ্ছে, সেই রিপোর্টও বিশ্লেষণ হচ্ছে। কোন সেতুর অবস্থা বেশি খারাপ, সারাইয়ে কোন সেতু অগ্রাধিকার পাবে, এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনও সেতু-সারাই সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি বলেই জানাচ্ছেন কেএমডিএ আধিকারিকেরা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ মাসের শেষে এ নিয়ে বৈঠক হবে। তখন একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সংস্থাগুলির সুপারিশ খতিয়ে দেখার পরে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ প্রসঙ্গত, গত মার্চ-এপ্রিল থেকে এই স্বাস্থ্য-পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
সংস্থা সূত্রের খবর, মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙার পরপর কেএমডিএ অধীনস্থ শহরের সেতুগুলির অবস্থা সমীক্ষা করার কথা বলা হয়েছিল। তা নিয়ে বিশেষ কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বরে শহরের কয়েকটি উড়ালপুল-সেতু ঘুরে দেখেছিলেন মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তখন তিনিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এর পরই স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তার আগেই ১৯টি সেতু ও উড়ালপুল রং করতে কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। স্বাস্থ্য-পরীক্ষার আগেই রং করা নিয়ে তখন বিতর্কও হয়েছিল। সংস্থার দাবি ছিল, স্বাস্থ্য-পরীক্ষা সময়সাপেক্ষ। রং করতে বেশি দিন লাগে না।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফায় আরও ১১টি উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। প্রসঙ্গত, মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙার পরপরই সেতু-উড়ালপুল সমীক্ষায় নেমে ‘ভিসুয়াল স্টাডি’ করেন আধিকারিকেরা। কিন্তু তা যথেষ্ট নয় বলে তাঁদের দাবি। কারণ, অনেক সময়েই বাইরে থেকে দেখে সেতু ও উড়ালপুলের অবস্থা বোঝা যায় না। কাঠামোর অবস্থা বোঝার জন্য বিশেষ যন্ত্র বা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সংস্থার পরামর্শের প্রয়োজন। এ বার তেমনই হচ্ছে বলে কেএমডিএ সূত্রের খবর।