প্রতীকী ছবি।
কলকাতা পুর এলাকায় অবস্থিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে মশা মারতে নির্দেশিকা পাঠাল স্বাস্থ্য দফতর!
শুক্রবার মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাব্যক্তিরা। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, সেই বৈঠকে পুর কর্তৃপক্ষ জানান, পুর এলাকায় অবস্থিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে পরিদর্শনে গিয়ে তাঁরা আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছেন না। সমন্বয়ের অভাবে মশার লার্ভা নিধনের কাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন পুরকর্মীরা। যার প্রেক্ষিতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির পরিচ্ছন্নতা, কোথাও জল জমে রয়েছে কি না, তা দেখার ভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের হাতেই তুলে দিল স্বাস্থ্য ভবন।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুধবার যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তাতে পুরসভার ওই অনুযোগেরই প্রতিফলন ঘটেছে। চিঠিতে পুর কর্তৃপক্ষ স্পষ্টই লিখেছেন, বারবার বলা সত্ত্বেও এনআরএসের চিকিৎসক ছাত্র-ছাত্রীদের হস্টেল ও সংলগ্ন এলাকার জঞ্জাল পরিষ্কার করা হয়নি। যার জেরে হাসপাতাল চত্বরে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এনআরএস শুধু নয়, শহরের বাকি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলি নিয়েও একই রকম অভিযোগ রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের। কোথাও বাঁশের ফাঁকে, কোথাও পরিত্যক্ত টিনের ফাঁকে, কোথাও আবার থার্মোকলের প্লেট, বাটি বা প্লাস্টিকের গ্লাসে জল জমে রয়েছে। সেখানেই নির্বিঘ্নে বংশবিস্তার করে চলেছে মশা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘হাসপাতালগুলির ছাদ, গ্যারাজ, নির্মাণস্থলে নিয়মিত নজরদারি কাজ ব্যাহত হচ্ছে।’’
শুক্রবারের বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্যসচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব শরৎ দ্বিবেদী ছাড়াও হাজির ছিলেন ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ভারপ্রাপ্ত অন্য আধিকারিকেরা। সেই বৈঠক থেকে ফিরেই একটি নির্দেশিকা জারি করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির নর্দমা, ভ্যাট, ছাদ, নির্মাণস্থল, গ্যারাজ বা অন্য কোথাও জল-জঞ্জাল জমে মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নজরদারি চালাবে স্বাস্থ্য দফতরের অন্তর্গত ‘কলকাতা মিউনিসিপ্যাল আর্বান হেলথ অর্গানাইজেশন’ (কেএমইউএইচও)। আজ, সোমবার থেকে কেএমইউএইচও-র কাজ শুরু করে দেওয়ার কথা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অনুযোগের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতে পুর এলাকার ডেঙ্গি আক্রান্ত বাসিন্দাদের জন্য শয্যা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। পত্রপাঠ না হলেও শনিবার নবান্নে ডেঙ্গি সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠকে তা খারিজ হয়ে গিয়েছে বলে খবর।
পরিদর্শনে অসহযোগিতার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘‘এখানে কোনও সংঘাতের বিষয় নেই। মেডিক্যাল কলেজগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সুপারের। সেই কাজে সুপারদের সাহায্য করার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।’’