প্রতীকী ছবি।
মেডিক্যাল অফিসারদের (এমও) অনেক পদ খালি। তার জন্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অভিযোগের সমাধানে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। লোকবলের অভাবে ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি যাতে ব্যাহত না হয়, তাই এ ব্যাপারে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি ওই ঘাটতি মেটাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করা হয়েছে। কোনও নির্দিষ্ট ব্লকে যত জন এমও রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে একটি ‘পুল’ তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রামীণ হাসপাতাল, প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ সমস্ত ধরনের চিকিৎসাকেন্দ্রে ওই পুল থেকে এমও-দের নিয়োগ করা হবে। কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কত জন এমও নিযুক্ত হবেন, সেটা ঠিক করবেন নির্দিষ্ট ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্তা। ঠিক হয়েছে, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এমও-দের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। ‘ডিউটি রোস্টার’ যাতে প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লাগানো থাকে, তা সংশ্লিষ্ট ব্লক স্বাস্থ্যকর্তাকে (বিএমওএইচ) নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কারণ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ব্লক স্তরে মেডিক্যাল অফিসারদের অসম বণ্টন রয়েছে। কোনও ব্লকে হয়তো পর্যাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন, কোনও ব্লকে আবার তাঁদের রীতিমতো অভাব রয়েছে। ফলে এই দুই ক্ষেত্রে ভারসাম্যের জন্যও নির্দিষ্ট পুল তৈরির একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘তৃণমূল স্তরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এমন অনেক অভিযোগ-সমস্যা দায়ের হয়, যেগুলি সেই স্তরেই সমাধান সম্ভব। সে কারণে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসারদের পরিকল্পনামাফিক নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে এটাও জানা যাচ্ছে যে, প্রতিটি সাব ডিভিশনে এক জন স্বাস্থ্যকর্তা ‘নোডাল সাব ডিভিশনাল অফিসার’ হিসেবে কাজ করবেন। সেই সঙ্গে প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ব্যক্তিগত ভাবে সমস্ত প্রক্রিয়া কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, ভোটের আগে মেডিক্যাল অফিসারদের নিয়ে ‘পুল’ তৈরি করার মধ্যে রাজনীতি জড়িয়ে রয়েছে। কারণ মেডিক্যাল অফিসারের পদ যে ফাঁকা রয়েছে, তা নতুন নয়। সে কারণে গ্রামীণ, প্রাথমিক স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবা অনেক সময়েই ব্যাহত হওয়ার অভিযোগও ওঠে। এক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের কথায়, ‘‘পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক নেই, এটা নতুন কোনও বিষয় নয়। তার থেকেও বড় কথা, ব্লকভিত্তিক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মধ্যে অসম বণ্টন রয়েছে। এখন নির্বাচনের কারণেই যদি স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দায়িত্বে সমতা আসে, তবে তা রাজ্যের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবার পক্ষে ভাল।’’