ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকার নিযুক্ত কলকাতা পুরসভার ‘বোর্ড অব ডিরেক্টরস’-কে কেয়ারটেকার হিসাবে চার সপ্তাহ কাজ চালানোর অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবারই রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করে। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বুধবারই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন উত্তর কলকাতার বাসিন্দা শরদকুমার সিংহ। বৃহস্পতিবার সেই মামলা নথিভুক্ত হলেও দুপুর পর্যন্ত শুনানির দিন ধার্য হয়নি। কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবীদের অনুরোধে বেনজির ভাবে এ দিন সন্ধ্যার পর ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি শুরু করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। তিনি মামলাটি গ্রহণ করেন।
মামলাকারী তাঁর আবেদনে জানান, কলকাতা পুর আইনের কোথাও প্রশাসক নিয়োগের কোনও সংস্থানের উল্লেখ নেই। রাজ্য সরকারের নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশনামায় কলকাতা পুর আইনের যে ধারাকে উদ্ধৃত করে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে, তাতে আইনের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পুর আইনে প্রশাসক নিয়োগের সংস্থান আছে। কিন্তু কলকাতা পুর আইনে নেই। কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগের ঘটনা এই প্রথম। শরদকুমার সিংহের আবেদনে বলা হয়েছে, প্রশাসকদের বোর্ডে রয়েছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা, যাঁদের মেয়াদ উত্তীর্ণ। তার পর কী ভাবে তাঁরা ফের প্রশাসকদের বোর্ডে শামিল হন? প্রশ্ন করেছেন মামলাকারী। একই ভাবে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কী ভাবে নিজেকেই প্রশাসকদের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ করলেন? সেই প্রশ্নও তোলেন মামলাকারী।
মামলাকারীর আবেদন, সরকারের ওই বিজ্ঞপ্তিকে বাতিল করা হোক। মামলাকারীর অন্যতম আইনজীবী পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘যদি এই অতিমারির পরিস্থিতিতে বেনজিরভাবে প্রশাসক নিয়োগ করতেই হয়, তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ জনপ্রতিনিধিদের নিয়োগ না করে সরকারি আধিকারিকরা প্রশাসক হিসাবে কাজ করতে পারেন পরবর্তী নির্বাদন পর্যন্ত।” তিনি আরও বলেন,‘‘কলকাতা পুরসভার পুর কমিশনার রয়েছেন। তিনি একজন শীর্ষ আমলা। তাঁকে প্রশাসক রেখেই পুরসভার কাজ চলতে পারে।”
আরও পড়ুন: প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত কী ভাবে? মুখ্যমন্ত্রীর জবাব চাইলেন রাজ্যপাল
মামলাকারীর আবেদন শুনে বিচারপতি সরকার নিযু্ক্ত বোর্ডকে চার সপ্তাহ কেয়ারটেকার বা তদারকি প্রশাসক হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এক মাস পর ফের এই মামলা শুনবেন বলে বিচারপতি জানিয়েছেন। মামলাকারীর অন্য এক আইনজীবী ব্রজেশ ঝা বলেন, ‘‘বিচারপতি এই অতিমারির পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে আপাতত স্থিতাবস্থা রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। কারণ এই পরিস্থিতিতে পরিবর্তন হলে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কেয়ার টেকার হিসাবে এই বোর্ডকে চিহ্নিত করে আমাদের আবেদনকেই মান্যতা দিয়েছেন বিচারপতি।” এ দিন সরকার পক্ষের কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না শুনানিতে।
আরও পড়ুন: অ্যাকাউন্ট ফাঁক, জামতাড়া মডেলে প্রতারণা চক্রের ঘাঁটি এ বার বাংলাতেও!