—প্রতীকী ছবি
ঘটা করে বলা হয়েছিল, করোনার জন্য যে উড়ান বাতিল করা হচ্ছে তার টিকিটের মূল্য জমা থাকবে উড়ান সংস্থার ঘরে। আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, স্বাভাবিক উড়ান চালু হওয়ার পরে যাত্রী চাইলে তাঁর বাতিল টিকিটের তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে সেটি ব্যবহার করে যে কোনও গন্তব্যে তিনি যেতে পারবেন।
কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ‘কথার খেলাপ’-এর অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। দক্ষিণ শহরতলির কুঁদঘাটের বাসিন্দা, ৭৩ বছরের প্রণব বসু অভিযোগ করেছেন, গত এপ্রিলে সপরিবার আন্দামান যাওয়ার টিকিট কেটেছিলেন। সেই বাতিল টিকিট নিয়ে চলতি বছরের মার্চে যেতে চাইলে রাজি হচ্ছে না উড়ান সংস্থা। উড়ান সংস্থার ওয়েবসাইটে গেলে দেখানো হচ্ছে, ১১ মাসের মাথায় ফেব্রুয়ারি মাসেই শেষ হয়ে যাচ্ছে সেই বাতিল টিকিটের মেয়াদ। প্রণববাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার এত বয়স। স্ত্রীও যথেষ্ট বয়স্ক। যে ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে গত এপ্রিলে আমাদের আন্দামানে যাওয়ার কথা ছিল, তারা জানিয়েছে, মার্চের আগে সেখানকার হোটেল পাওয়া মুশকিল। এখনও সেখানে সব কিছু স্বাভাবিক হয়নি। অথচ মার্চের টিকিট দিতে চাইছে না উড়ান সংস্থা।’’
প্রণববাবুদের সঙ্গে গত বছরের ১৬ এপ্রিল আন্দামানে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের দুই ছেলে এবং মেয়ে-জামাইয়ের। জামাই সৌমেন্দ্র মিত্রই ২০২০ সালের জানুয়ারিতে নেট থেকে ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে ছ’জনের যাতায়াতের টিকিট কেটেছিলেন। তাঁদের ফেরার টিকিট ছিল ২৪ এপ্রিল। গত বছরের ২৪ মার্চ থেকে সব ধরনের যাত্রী উড়ান বন্ধ হয়ে যায়। ঠিক হয়, করোনার সময়ে বাতিল উড়ানের যাত্রীরা যে টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছেন, সেই টাকা জমা থাকবে উড়ান সংস্থার ঘরে। বাতিল টিকিটের এক বছরের মধ্যে যে কোনও রুটে টিকিট কাটার সময়ে সেই টাকা ব্যবহার করা যাবে।
সৌমেন্দ্রর কথায়, ‘‘প্রথমে টাকা ফেরত চেয়ে পাইনি। বলা হল, আমাদের কাছে জমা থাকবে টাকা। এখন মার্চে যেতে চেয়ে নেটে আবেদন করলে তা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। বার বার উড়ান সংস্থার কল সেন্টারে যোগাযোগ করে সদুত্তর পাইনি। ভ্রমণ সংস্থাকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া আছে। এই পরিস্থিতিতে বয়স্ক শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু না গেলেও এত টাকা নষ্ট হয়ে যাবে তাই নিমরাজি হয়েই সবাইকে যেতে হচ্ছে।’’ এ নিয়ে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন-এর কাছে অভিযোগও করেছেন সৌমেন্দ্র।
যে উড়ান সংস্থার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন প্রণববাবু, সেই স্পাইসজেটের এক কর্তা জানান, সরাসরি উড়ান সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কাটলে, সংস্থা দায়ী থাকে। অনেকেই নেট এজেন্ট মারফত টিকিট কাটেন। সে ক্ষেত্রে সরাসরি সেই নেট এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সৌমেন্দ্র জানিয়েছেন, নেট এজেন্ট মারফত তিনি টিকিট কেটেছেন। তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে সাড়া পাচ্ছেন না।