প্রতীকী ছবি
বছরখানেক আগে পথ দুর্ঘটনায় কোমরে চোট পেয়েছিলেন তিনি। পুরোপুরি শয্যাশায়ী না-হলেও সেই আঘাত তাঁকে গৃহবন্দি করেছিল। মাঝেমধ্যেই তীব্র যন্ত্রণায় পরিত্রাহি চিৎকার করতেন পর্ণশ্রী পল্লির ছাতাপার্কের বাসিন্দা নাইজেল ক্যামিয়েড (২৮)। বৃহস্পতিবার সকালে সেই নাইজেলেরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল বাড়ি থেকে। কোনও সুইসাইড নোট না মিললেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। শারীরিক যন্ত্রণা এবং তার পরবর্তী অবসাদের জেরেই এই ঘটনা কি না, দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পুলিশ জানায়, পর্ণশ্রী পল্লির পাঁচতলা একটি আবাসনের একতলার ফ্ল্যাটে বাবা, মা ও ঠাকুরমার সঙ্গে থাকতেন অবিবাহিত ওই যুবক। বাড়ির কাছেই তাঁর দিদির বিয়ে হয়েছে। আবাসনের কেয়ারটেকার কর্ণ হালদার এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ ফ্ল্যাটের কোল্যাপসিব্ল গেটের রড থেকে নাইজেলকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। তিনিই ওই যুবকের বাবা ও আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের ডেকে তোলেন। তাঁরা এসে নাইজেলের দেহ কোল্যাপসিব্ল গেট থেকে নামান। খবর যায় থানাতেও। পুলিশ ওই যুবককে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ দিনই দুপুরে কাঁটাপুকুর মর্গে নাইজেলের দেহের ময়না-তদন্ত হয়।
প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, সড়ক দুর্ঘটনার পরে ধীরে ধীরে চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছিলেন নাইজেল। ওয়াকার ছাড়া হাঁটতে পারতেন না। চেয়ারে সোজা হয়ে বসতেও পারতেন না। এমবিএ পাশ করা ওই যুবক সোদপুরের একটি সংস্থায় উঁচু পদে কাজ করতেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে সেখানেও আর যেতে পারতেন না। এ নিয়ে পরিবার ও অন্য আবাসিকদের কাছে মাঝেমধ্যে আক্ষেপও করতেন নাইজেল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, আবাসনের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত গল্পও করেন ওই যুবক।
এ দিন ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা যুবকের মা ও ঠাকুরমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। অঝোরে কাঁদছেন দু’জনেই। নাইজেলের বাবাকে নিয়ে তাঁর দিদি ও জামাইবাবু গিয়েছেন কাঁটাপুকুর মর্গে। তাঁদের সঙ্গে গিয়েছেন কয়েক জন প্রতিবেশীও।