নীলিমাকে এ দিন ৬টার পরে শয্যায় দেখা যায়নি। প্রতীকী ছবি
হরিদেবপুর থানা এলাকার একটি ক্যানসার হাসপাতালের এক রোগিণীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত রোগিণীর নাম নীলিমা সাহা (৫৭)। শুক্রবার সকালে ওই হাসপাতালের একটি শৌচাগার থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতার বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার বারওয়ানে। গত ১৭ অগস্ট থেকে তিনি ওই হাসপাতালে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নীলিমাকে এ দিন ৬টার পরে শয্যায় দেখা যায়নি। হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডেরই একটি শৌচাগারে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শৌচাগারে পোশাক ঝোলানোর যে হ্যাঙার রয়েছে, সেটির সঙ্গেই গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন ওই রোগিণী।
তবে নীলিমাকে যে ভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পরিজনেরা। নীলিমার ছেলে অতনু বলেন, ‘‘ওই হ্যাঙারটি চার ফুট থেকে সাড়ে চার ফুট উচ্চতায় রয়েছে। মায়ের উচ্চতা তার থেকে বেশি। ওই হ্যাঙার থেকে মায়ের পক্ষে আত্মঘাতী হওয়া কি সম্ভব?’’ নীলিমার দেহ হাঁটু গেড়ে বসা অবস্থায় ছিল বলে জানান তাঁর এক আত্মীয় সৌমিত্র। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে দেহটি ছিল, আমি নিজে দেখেছি। আমরা মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখার আবেদন করেছি পুলিশের কাছে। আমরা দাবি করেছি, ভিডিয়োগ্রাফি করে ময়না-তদন্ত হোক।’’ অতনু বলেন, ‘‘মায়ের সঙ্গে কাল রাত ৯টা নাগাদও ফোনে কথা হয়েছে। মায়ের মধ্যে কোনও ধরনের মানসিক অবসাদ আমরা টের পাইনি।’’
‘সরোজ গুপ্ত ক্যানসার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ নামে ওই হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট পার্থ হালদার বলেন, ‘‘যে ভাবে দেহটি ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, তাতে আমাদেরও মনে হয়েছে, এই ভাবে কি কেউ গলায় ফাঁস লাগাতে পারেন? ময়না-তদন্তের রিপোর্ট অবশ্য এখনও আসেনি।’’ পার্থ জানান, ওই রোগিণীর মধ্যে কোনও ধরনের মানসিক অবসাদের লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘কোনও রোগীর যদি কোনও রকম মানসিক অবসাদ দেখা যায়, তখন মনোবিদদের দিয়ে কাউন্সেলিং করানো হয়। মনোরোগ চিকিৎসকও দেখানো হয়। তবে নীলিমার এই রকম কোনও রেকর্ড না থাকায় কাউন্সেলিং হয়নি। তাঁর আর্থিক সমস্যাও ছিল না বলেই আমরা জানতে পেরেছি।’’