—প্রতীকী চিত্র।
পূর্ব ভারতে প্রথম মরণোত্তর হাত প্রতিস্থাপন হয়েছিল এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে। উলুবেড়িয়ার তেতাল্লিশ বছরের এক যুবকের ব্রেন ডেথের পরে তাঁর দু’টি হাত প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল বিরাটির এক যুবকের শরীরে। কিন্তু অন্যের অঙ্গ ঠিক মতো গ্রহণ করতে পারছে না গ্রহীতার শরীর। অগত্যা মঙ্গলবার রাতে ডান হাতটি বাদ দিতে হয়েছে। সূত্রের খবর, বাঁ হাতটি নিয়ে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে পারছেন না চিকিৎসকেরা।
পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা হরিপদ রানার ১৪ জুলাই ব্রেন ডেথ হয়। তাঁর মরণোত্তর অঙ্গদানের পরে দু’টি হাত পেয়েছিলেন বিরাটির বাসিন্দা এক যুবক। বৈদ্যুতিক শকে তাঁর দু’টি হাতই ঝলসে গিয়েছিল। প্রায় এক বছর অপেক্ষার পরে গত ১৫ জুলাই তিনি দু’টি হাত পান। কিন্তু প্রতিস্থাপনের পর থেকেই চিন্তায় ছিলেন চিকিৎসকেরা। কারণ, তাঁরা জানাচ্ছেন, সাধারণত প্রতিস্থাপনের পরে অষ্টম দিন থেকেই শুরু হয় প্রত্যাখ্যান। বিরাটির ওই যুবকের ক্ষেত্রে কী হবে, তা নিয়েই সকলে সংশয়ে ছিলেন। সূত্রের খবর, গত ২৩ জুলাই থেকে ডান হাতটিতে ‘হাইপার-অ্যাকিউট অ্যান্টিবডি মিডিয়েটেড রিজেকশন’ শুরু হয়। তার পরেই মঙ্গলবার রাতে হাতটি বাদ দিতে হয়। চিকিৎসকেরা জানান, কিডনি প্রতিস্থাপনে সাফল্যের হার যেখানে ৮০ শতাংশ, সেখানে হাতের ক্ষেত্রে সেই হার ১০-২০ শতাংশ। ফলে এই প্রতিস্থাপনও খুব জটিল ও ঝুঁকির ছিল।
সূত্রের খবর, প্রতিস্থাপনের পর থেকেই বিরাটির যুবককে কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। দাতার বাঁ হাতে যে হেতু স্যালাইন ও রক্ত সঞ্চালনের চ্যানেল করা ছিল, তাই ওই হাতে থ্রম্বোসিস হয়েছিল। ফলে সেই হাতটি নিয়ে চিন্তা বেশি ছিল। ডান হাতটি সেই তুলনায় ভাল ছিল। হাতের মাংসপেশি গরম হচ্ছিল, আঙুলগুলিতেও সাড় ছিল। কিন্তু সাত দিন পর থেকে ওই যুবকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিস্থাপন হওয়া অঙ্গটি প্রত্যাখ্যান করতে শুরু করে।