বৌবাজার এলাকায় হাতে টানা রিকশা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
কলকাতা শহরে হাতে টানা রিকশা বাতিল হয়েছে ১৩ বছর আগে। কিন্তু তার পরেও ‘স্বমহিমায়’ শহরের বেশ কিছু অংশে দেখা যাচ্ছে তার অবাধ চলাচল।
যদিও পরিবহণ দফতরের দাবি, নতুন করে হাতে টানা রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয় না। পুরনোদের লাইসেন্সও নবীকরণ করা হয় না।
কিন্তু, তার পরেও কেন কলকাতায় হাতে টানা রিকশা চলছে, তা পুলিশ বলতে পারবে।
এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের দাবি, শহরে এখন এক জনেরও হাতে টানা রিকশার লাইসেন্স নেই। কিন্তু প্রায় হাজার পাঁচেক এমন রিকশা চলছে কলকাতার পথে। আইনে নিষিদ্ধ হলেও মানবিকতার খাতিরে পুরনো রিকশাওয়ালাদের বিরুদ্ধে ‘কড়া’ ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।
কেন? এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘১৩ বছর আগে যখন এই সংক্রান্ত আইন বাতিল হয়, তখন সরকার রিকশাওয়ালাদের পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তাঁরা সেই প্যাকেজ নিয়ে সহমত হতে পারেননি। ওই আলোচনা নাকি আজও চলছে, তাই হাতে টানা রিকশায় রাশ পড়েনি।’’ কলকাতা পুলিশের আর এক কর্তা বলেন, ‘‘যে হাজার পাঁচেক রিকশাওয়ালা রয়েছেন, অধিকাংশের বয়স হয়েছে। তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মের বেশিরভাগই এই পেশায় আসেননি। ফলে কালের নিয়মে হাতে টানা রিকশা কমে আসছে। আইনত নিষিদ্ধ হলেও সরকার জোর করে তা বন্ধ করতে চাইছে না।’’
পরিবহণ দফতর জানাচ্ছে, ১৯১৯ সালে ‘ক্যালকাটা হ্যাকনি ক্যারেজ অ্যাক্ট’ চালু হয়েছিল। সেই আইনে ব্রিটিশ শাসকেরা কলকাতা শহরে ঘোড়া, গরুর গাড়ি, পালকি, হাতে টানা রিকশার উপর নিয়ন্ত্রণ এনেছিল। তখন থেকেই শহরে লাইসেন্স নিয়ে হাতে টানা রিকশা চলাচলের শুরু। ২০০৬-এর অগস্টে স্বাধীনতা দিবসের দিন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এমন রিকশা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। বাতিল করে দেওয়া হয় ১৯১৯-এর হ্যাকনি ক্যারেজ আইনও। কিন্তু তার পরেও কলকাতায় থেকে যাওয়া রিকশাগুলি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।