ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রীদের। প্রতীকী ছবি।
অ্যাপ-ক্যাবে যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ত বাড়ছে। চালকদের প্রাপ্য এবং সংস্থার কমিশনের হার নিয়ে দু’পক্ষের টানাপড়েন বহাল থাকায় প্রায় তলানিতে পরিষেবা। উন্নত পরিষেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ক্যাব সংস্থাগুলির তরফে ভাড়ার হার বৃদ্ধি করা হলেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। গন্তব্য পছন্দ না হলে চালকদের তরফে ট্রিপ বাতিল করা ছাড়া এসি না চালানোর প্রবণতা এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তো আছেই। এর সঙ্গে সম্প্রতি পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, চালকেরা গন্তব্য ছাড়াও যাত্রীদের ফোন করে ভাড়ার অঙ্ক জানতে চাইছেন। অঙ্ক মনমতো না হলে সেই ট্রিপ তাঁরা অন্য চালককে দিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
যাত্রীদের বড় অংশের অভিযোগ, দিনের ব্যস্ত সময়ে অ্যাপ-ক্যাবে ভাড়ার হার যেমন চড়া থাকে, তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের কিলোমিটারপিছু ৩৫-৩৭ টাকা গুনতে হচ্ছে। ভাড়ার হার যেখানে বেশি, সেই সংস্থায় চালকেরা ভিড় করছেন। ফলে দুপুরে ও বিশেষত রাতে শহরের মূল বাণিজ্যিক এলাকার বাইরে ক্যাব পেতে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
অ্যাপ-ক্যাবগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে গত মার্চে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, পরিবর্তিত শর্ত মেনে ক্যাব সংস্থাগুলিকে নতুন করে লাইসেন্স নিতে হবে। নির্দেশিকার মেয়াদ ফুরনোর মুখে দু’দফায় তার সময়সীমা বাড়ানো হয়। তার পরে শর্ত মেনে কয়েকটি ক্যাব সংস্থা লাইসেন্স নিলেও একটি বড় সংস্থা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়। অভিযোগ, তার পর থেকেই ঝুলে রয়েছে ওই নির্দেশিকা বাস্তবায়িত করার বিষয়টি। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে সেটি চালু না হওয়ায় যাত্রীদের ভোগান্তিও এক চুল কমেনি। সিটু অনুমোদিত অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘নির্দেশিকা চালু না হওয়ায় চালকেরা ঠিক মতো কমিশন পাচ্ছেন না। সংস্থাগুলি মাঝেমধ্যে চালকদের আইডি ব্লক করে দিলেও নির্দিষ্ট কারণ জানাচ্ছে না।’’
সরকারি নির্দেশিকা অবিলম্বে বলবৎ করার দাবি জানিয়েছে এআইটিইউসি অনুমোদিত ক্যাবচালকদের সংগঠন এবং ‘অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’ও। এআইটিইউসি-র অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘ক্যাব সংস্থাগুলিকে সরকার নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় চালকদের প্রাপ্য নিয়ে জটিলতা কাটছে না। ট্র্যাফিক আইন এবং দূষণ সংক্রান্ত বিধিভঙ্গের চড়া জরিমানা পরিস্থিতি আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।’’
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চালকদের আর্থিক ক্ষতি কমাতে বিকল্প জ্বালানির পরিকাঠামো দ্রুত তৈরি করা প্রয়োজন। সরকারি নির্দেশিকা বলবৎ করাও জরুরি।’’