প্রতীকী ছবি।
নাবালক-নাবালিকাদের সুরক্ষায় শহরের থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে একগুচ্ছ নির্দেশ দিল লালবাজার। কোনও নাবালক অথবা নাবালিকাকে রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলে অথবা তার গতিবিধি দেখে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সন্দেহ হলে তাকে উদ্ধার করে কী কী করতে হবে, তা বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোথাও কোনও নাবালক বা নাবালিকাকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখলে তাকে প্রথমে উদ্ধার করবেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মী বা চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা। এর পরে তাকে স্থানীয় থানার হাতে তুলে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট থানায় শিশুকল্যাণে নিযুক্ত অফিসার (চাইল্ড ওয়েলফেয়ার পুলিশ অফিসার) ওই নাবালক বা নাবালিকার সঙ্গে কথা বলে তার পরিবার বা অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
লালবাজারের নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, উদ্ধার করা নাবালক-নাবালিকাকে থানায় তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় (চাইল্ড ফ্রেন্ডলি কর্নার) রাখতে হবে। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রত্যেক থানায় তৈরি করা হয়েছে এমন শিশুবান্ধব জায়গা। সেখানেই ওই নাবালক বা নাবালিকার সঙ্গে কথা বলবেন থানার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার পুলিশ অফিসার। প্রয়োজন হলে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষারও ব্যবস্থা করবেন। একই সঙ্গে ওই নাবালক বা নাবালিকাকে উদ্ধারের খবর জানাতে হবে শিশু কল্যাণ সমিতিকে।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, উদ্ধার করার পরে ওই নাবালক বা নাবালিকাকে কোথায় রাখা হবে, তা ঠিক করবে শিশু কল্যাণ সমিতি। যদি ওই নাবালক-নাবালিকার পরিবারের খোঁজ মেলে, সে ক্ষেত্রে তাকে সমিতির সামনে হাজির করানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিশুকল্যাণে নিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতিদিনই কলকাতা পুলিশ এলাকায় অনেক নাবালক-নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। মূলত পুলিশকর্মীরাই তাদের উদ্ধার করে শিশু কল্যাণ সমিতিকে জানান, অথবা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেন। পুলিশের একাংশের অনুমান, এই প্রক্রিয়ায় যাতে ফাঁক না থাকে, তার জন্যই ট্র্যাফিক গার্ড এবং থানাগুলির কাছে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, অতীতে শিশু কল্যাণ সমিতিকে না জানিয়েই অনেক ক্ষেত্রে উদ্ধার হওয়া নাবালক-নাবালিকাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অথবা হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের একাংশের দাবি, এমন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই লালবাজারের এই নির্দেশ।
মধ্য কলকাতার এক পুলিশ অফিসার জানান, কোনও নাবালক বা নাবালিকাকে উদ্ধারের পরে তার পরিবারের খোঁজ না মিললে নিখোঁজ নাবালক-নাবালিকাদের জন্য তৈরি হওয়া ‘মিসিং চিলড্রেন ট্র্যাকিং পোর্টালে’ সংশ্লিষ্ট নাবালক বা নাবালিকার ছবি-সহ বিবরণ আপলোড করতে হবে। যাতে অন্য জায়গার পুলিশের অফিসারেরা তাদের শনাক্ত করতে পারেন।