বৃষ্টির জেরে এখনই আনাজের দাম কমার সম্ভাবনা কম। নিজস্ব চিত্র
কয়েক দিনের অতিবৃষ্টির পরেই শহর জুড়ে শুরু হয়েছে আনাজপাতির ‘হাই জাম্প’। দিনকয়েকের মধ্যে প্রায় প্রতিটি আনাজেরই দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে। শহরের বিভিন্ন বাজারের আনাজ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বৃষ্টিতে চাষবাসের যে রকম ক্ষতি হয়েছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে দাম কমার সম্ভাবনা কম। পুজোর সময়ে মনের সুখে বাজার করার সাধ কতটা মেটানো যাবে, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
বর্ষার শেষ প্রহরে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের শেষে বৃষ্টি অধিকাংশ সময়েই নিম্নচাপের কারণে হয়। চাষিরা জানাচ্ছেন, অন্যান্য বার সেই বৃষ্টি সামলে নেওয়া যায়। কিন্তু এ বার সামলানো যাচ্ছে না। একের পর এক নিম্নচাপের আক্রমণে নষ্টই হয়ে যাচ্ছে খেতের ফসল। অনেক চেষ্টাতেও বাঁচানো যাচ্ছে না কিছু।
কোলে মার্কেটের বিক্রেতারা জানালেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, ক্যানিং, গোসাবা ও মথুরাপুরে অধিকাংশ ফসলই জলের নীচে। ঢেঁড়স, কাঁচালঙ্কা, বেগুন, শসা— প্রায় কিছুই বাঁচানো যায়নি। এ শহরে অধিকাংশ ফসলই আসে বসিরহাট সাব-ডিভিশন থেকে। সেখানেও জলমগ্ন অধিকাংশ খেত।
আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে গঠিত, রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বললেন, “লতানে গাছের প্রায় কিছুই বাঁচেনি।” তিনি জানান, ভাঙড়ের ফুলকপি, বাঁধাকপি বাজারে আসতে শুরু করেছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে পোকা ধরে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে সব। গড়িয়াহাট বাজারের ব্যবসায়ী দিলীপ মণ্ডল বলেন, “আনাজের দাম এক ধাক্কায় এতটা বাড়ায় বিক্রেতারাও স্বস্তিতে নেই। এমনিতেই করোনা আবহে কাজ না থাকায় মানুষের আর্থিক অবস্থা খারাপ। পুজোর মুখে আনাজের দাম বাড়লে মানুষ কি প্রাণ খুলে বাজার করতে পারবে?” মানিকতলা বাজারের আনাজ বিক্রেতা মন্টু হাজরার কথায়, “খেতের জল সেচের মাধ্যমে নদীতে ফেলা যাচ্ছে না। কারণ, নদীও তো প্লাবিত। আকাশে মেঘ দেখলেই ভয় করছে। এ রকম বৃষ্টি চললে আনাজের আরও বড় ধরনের সঙ্কট দেখা দেবে।”
সোমবার সকালে মানিকতলায় বাজার করতে এসে এলাকার বাসিন্দা রতন পাল বললেন, “আনাজে হাত দিলে হাত পুড়ে যাচ্ছে। তবে এখনও দাম বাড়েনি আলুর। আলু চোখা বা আলু চচ্চড়ি— এ সবের উপরেই আগামী কয়েকটা দিন ভরসা রাখতে হবে বলে মনে হচ্ছে।”