Howrah Municipality

আতঙ্ক বাড়িয়ে করোনা-হানা হাওড়া পুরসভায়

পুলিশ জানিয়েছে, ১৭টি কন্টেনমেন্ট জ়োনে আগামী এক সপ্তাহ বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে পারবেন না। এলাকার বাসিন্দারাও বেরোতে পারবেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৪:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি

পুলিশ সক্রিয় হতেই লকডাউনের প্রথম দিকের ছবি ফিরে এল হাওড়ায়। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার আগেই কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষিত হাওড়া পুরসভার ১৭টি এলাকা গার্ডরেল বসিয়ে সিল করে দিল পুলিশ। চলল টহলদারি। এরই মধ্যে এ দিন পুরসভার এক উচ্চপদস্থ কর্তা ও কর্মী মিলিয়ে মোট ১২ জনের করোনা পজ়িটিভ হওয়ার খবর সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ওই ১২ জনের মধ্যে আছেন পুরসভার এক ডেপুটি কমিশনার। প্রসঙ্গত, হাওড়া পুরসভা যে ওয়ার্ডে, সেই ২৯ নম্বর ওয়ার্ডও কন্টেনমেন্ট জ়োনে রয়েছে। ডেপুটি কমিশনার আক্রান্ত হওয়ায় গৃহ-পর্যবেক্ষণে গিয়েছেন পুর কমিশনার-সহ আরও কয়েক জন শীর্ষ কর্তা। আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরসভার অন্য অফিসার ও কর্মীদের মধ্যে। আজ, শুক্রবার থেকে জরুরি পরিষেবা ছাড়া পুরসভার সব বিভাগ বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

শহরের ১৭টি কন্টেনমেন্ট জ়োনে ফের লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরেই এ দিন সকাল থেকে ওই এলাকাগুলির দোকান, বাজার ও ব্যাঙ্কে ভিড় উপচে পড়ে। দেশ ও রাজ্য জুড়ে সংক্রমণ বাড়ছে জেনেও বাজারমুখী মানুষের মধ্যে তেমন হেলদোল দেখা যায়নি। অনেকেই পকেটে মাস্ক নিয়ে বাজার করেছেন। দূরত্ব-বিধি উড়িয়ে পাঁচ জন করে যাত্রী নিয়ে চলেছে অটো এবং টোটো। তবে দুপুর থেকে পুলিশ মাইকে লকডাউনের ঘোষণা শুরু করার পরেই ছবিটা বদলে যেতে থাকে।

পুলিশ জানিয়েছে, ১৭টি কন্টেনমেন্ট জ়োনে আগামী এক সপ্তাহ বাইরে থেকে কেউ ঢুকতে পারবেন না। এলাকার বাসিন্দারাও বেরোতে পারবেন না। একান্তই বেরোতে হলে পুলিশের অনুমতি লাগবে। জরুরি পরিষেবা যেমন আনাজ, ওষুধ ও দুধের দোকান ছাড়া বাকি দোকান বন্ধ থাকবে। এ দিন লকডাউন শুরু হওয়ার পরে ১৭টি কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাওড়া ময়দান চত্বর ক্রমশ ফাঁকা হতে শুরু করে। গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় চিন্তামণি দে রোড, পুরসভার সামনে মহাত্মা গাঁধী রোড, জেলাশাসকের বাংলোর সামনে ঋষি বঙ্কিম সরণি-সহ অফিসপাড়ার সব রাস্তা। সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘জরুরি পরিষেবার সরকারি অফিস ছাড়া বাকি সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক, দোকান ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে মূল রাস্তাগুলি খোলা থাকছে।’’

Advertisement

অসুবিধা হলেও সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ এই লকডাউনকে সমর্থন করছেন। হাট লেনের বাসিন্দা রাজিন্দর যাদব বলেন, ‘‘রোজ আমাদের এলাকায় তিন-চার জন আক্রান্ত হচ্ছেন। সব জেনেও অনেকে নিয়ম মানছেন না। এ বার মানতে বাধ্য হবেন।’’

এ দিন‌ বিকেলে কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে লকডাউন শুরুর আগেই আতঙ্ক আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে পুরসভা চত্বরে। সূত্রের খবর, পুরসভার ডেপুটি কমিশনার (১)-সহ অর্থ বিভাগের একাধিক কর্তা, এক জন ইঞ্জিনিয়ার এবং কমিশনারের দফতরের একাধিক কর্মীর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। ইতিমধ্যেই গৃহ-পর্যবেক্ষণে গিয়েছেন পুর কমিশনার ধবল জৈন-সহ কয়েক জন পুর আধিকারিক। স্বাস্থ্য এবং জঞ্জাল অপসারণ বিভাগ ছাড়া পুরসভার বাকি সব বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘মোট ২০ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। ১২ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। বাকিদের রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement