প্রতীকী ছবি।
এপ্রিল মাসের শুরুতে উত্তর ২৪ পরগনায় দৈনিক করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল চারশোর মধ্যে। এই ক’দিনের মধ্যে সেই সংখ্যাটাই তিন হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ওই জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৪০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭ হাজার ৩৪৬।
দৈনিক সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি দেখে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিতে চলেছে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় এ বার ওই জেলায় বড় বড় সেফ হোম তৈরির পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই পানিহাটি, বরাহনগর-সহ কয়েকটি এলাকায় সেফ হোম চালু হয়ে গিয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন এবং বারাসতেও শীঘ্রই সেফ হোম চালু হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, এলাকায় বড় সেফ হোম করা যায়, এমন জায়গা খুঁজে রাখতে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “এ বার সেফ হোমগুলিতে কম করে ১০০-৩০০ জন রোগীর থাকার মতো ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ২০, ৩০, ৫০ শয্যার সেফ হোম আর তৈরি করা হচ্ছে না। কারণ, গত বছর দেখা গিয়েছে, ছোট ছোট সেফ হোমে পরিকাঠামোর অপচয় বেশি হয়। তা ছাড়া, এত চিকিৎসক, নার্স দেওয়াও সম্ভব নয়।”
এ দিকে, করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করলেও বনগাঁ, হাবড়া, বারাসত, বসিরহাট, ব্যারাকপুরে বাসিন্দাদের একাংশের এখনও হুঁশ ফিরছে না। বিশেষ করে, জেলার গ্রামীণ এলাকায় সচেতনতা প্রায় নেই বললেই চলে। গ্রামের হাট-বাজারগুলিতে মানুষ এখনও ভিড় করে কেনাকাটা করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতা, কারও মুখেই মাস্ক থাকছে না। পুর এলাকাগুলিতে তুলনায় মানুষ সচেতন। অন্তত মাস্ক ব্যবহার করছেন। তবে তাঁদের একাংশের মধ্যে এখনও বেপরোয়া মনোভাব রয়েছে। অনেকেই মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে চলাফেরা করছেন। ভ্যানচালকেরা অনেকেই মাস্ক ছাড়া যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছেন। কয়েক জন টোটোচালককেও দেখা গেল, মাস্ক ছাড়াই যাত্রী নিয়ে যাওয়া-আসা করছেন। চায়ের ঠেকে এখনও আড্ডা চলছে। প্রশ্ন করলে অনেকেই বলছেন, “রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল বন্ধ করে দেখান, তার পরে আমাদের বলবেন।” শ্মশানগুলিতে দেখা যাচ্ছে, দাহ করতে গাড়ি ভর্তি করে ৪০-৫০ জন আসছেন। তাঁদের মাস্ক থাকছে না। গাড়িতে শারীরিক দূরত্ব-বিধিও মানা হচ্ছে না।
সোমবারও জেলায় পুলিশকে মাস্কহীনদের তেমন ধরপাকড় করতে দেখা যায়নি। পুলিশের এই গা-ছাড়া মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সচেতন নাগরিকেরা। পুলিশের অবশ্য বলছে, ধরপাকড় চলছে।