টালার বদলে বিকল্প সেতু ব্যবহারের ভাবনা রাজ্যের

বাগবাজার থেকে কাশীপুর হয়ে বিটি রোড সংযোগকারী নতুন সেতুটি আলোচনায় এসেছিল মঙ্গলবার। মুখ্যমন্ত্রী নতুন পরিকল্পনার সম্ভাব্য সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৪৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

টালা ব্রিজ পুরোপুরি বন্ধ করে বিকল্প একটি সেতু দিয়ে যান চলাচল করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নতুন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আজ, বুধবার কলকাতা পুলিশের পর্যবেক্ষণের পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। লালবাজার সূত্রের খবর, সেই পর্যবেক্ষণের পরে মুখ্যমন্ত্রীকে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

বাগবাজার থেকে কাশীপুর হয়ে বিটি রোড সংযোগকারী নতুন সেতুটি আলোচনায় এসেছিল মঙ্গলবার। মুখ্যমন্ত্রী নতুন পরিকল্পনার সম্ভাব্য সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রথমে জানা গিয়েছিল, ওই এলাকায় জলপ্রকল্পের কাজের জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে সমস্যা হতে পারে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য জানিয়েছেন, সেই কাজ পুরসভার নয়। পরে জানা যায়, কাজটি পূর্ত দফতরের। পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অরূপকে তিনি জানান, প্রয়োজনে পূর্ত দফতরের কাজ আপাতত বন্ধ রেখে সাধারণের যাওয়া-আসার জন্য সেতু ব্যবহার করতে দিতে হবে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন নবান্নের বৈঠকে স্থির হয়েছে, টালা ব্রিজের উপর দিয়ে আপাতত বাস চলাচল করবে না। তবে ছোট গাড়ি, তিন টনের কম ওজনের গাড়ি এবং পথচারীরা চলাচল করবেন। আগামী ১২ অক্টোবর এ বিষয়ে বৈঠক রয়েছে। তারপরে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির হবে। টালা ব্রিজের অবস্থা সম্পর্কে রেল কর্তৃপক্ষকে বার বার জানানো হলেও তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ রাজ্যের। বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রেলের সঙ্গে সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষর করে নিজেদের এক্তিয়ারভুক্ত পরিকাঠামোগুলি দেখাশোনার ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, টালা ব্রিজের অবস্থা নিয়ে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এ পর্যন্ত রেলকে অন্তত ১৩টি চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে ওই ব্রিজের রুগ্‌ণ দশা নিয়ে আশঙ্কার কথাও প্রকাশ করেছিল রাজ্য। যদিও রেল বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছিল, ওই ব্রিজের স্বাস্থ্যে খুঁত পাওয়া যায়নি। কিন্তু সেতুর স্বাস্থ্যে একাধিক খুঁত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরুর জন্য রেলকে অনুরোধ করেছিল রাজ্য।

টালা ব্রিজে নিজেদের এক্তিয়ারভুক্ত অংশে সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে রাজ্য দেখে, সেতুর গার্ডার থেকে জল বেরোচ্ছে। সেই ঘটনার উল্লেখ করে রেলকে রাজ্য জানায়, সেতুর ভিতরে জল ভরে যাওয়ায় ভার অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে। রেলের সমীক্ষক সংস্থা রাইটসের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে রাজ্য আরও জানায়, সেতু ভেঙে পড়তে পারে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, রেল রাজ্যকে জানিয়েছিল, রেলের এক্তিয়ারভুক্ত রেলওয়ে ওভারব্রিজ (আরওবি) অংশে সমস্যা নেই। বরং ১৯৬২ সালে তৈরি ওই ব্রিজ রাজ্যকে দেখভাল করতে হবে।

এ দিনের বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রেলেরও তাদের ব্রিজগুলি অডিট করা উচিত। তবে তারা তা করছে কি না, বলতে পারব না। টালা ব্রিজ নিয়ে বারবার বলা হয়েছে। তাদের সংস্থা রাইটস-ও বলেছে ব্রিজের স্বাস্থ্য খারাপ। রেলকে বলব, কোনটা রাজ্যের, কোনটা কেন্দ্রের, তা ভুলে যাও। মউ সই হোক। যেটা যার, সেটা সে দেখাশোনা করবে।’’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেকগুলি ব্রিজ একসঙ্গে সারানো সম্ভব নয়। কারণ, তার জন্য টাকা, প্রযুক্তি-সহ অনেক কিছু ব্যবস্থা করতে হয়। তাই, একটি করে সেতু সংস্কার করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘আশা করি, মাঝেরহাট ব্রিজ ডিসেম্বর নাগাদ চালু করা যাবে। পুজোর সময় অফিস ছুটি থাকলেও নজরদারি এবং পারস্পরিক সমন্বয়ের কাজ চালিয়ে যাবেন অফিসাররা।’’

গোটা বিষয়ে রেলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement