ফাইল ছবি
ক্যাম্পাসে বসে অফলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক, পড়ুয়াদের স্বার্থে এমনটাই চাইছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (জুটা)। জুটা নেতৃত্বের বক্তব্য, অনলাইনে পরীক্ষা দিতে গিয়ে পড়ুয়া এবং শিক্ষক— দু’পক্ষেরই খুব অসুবিধা হচ্ছে। বিষয়টি ইতিমধ্যেই জুটার পক্ষ থেকে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে জানানো হয়েছে।
অতিমারির জেরে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে গত কয়েকটি পরীক্ষা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অনলাইনেই নিতে হয়েছে। পড়ুয়ারা বাড়িতে বসেই সেই পরীক্ষা দিয়েছেন। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় মঙ্গলবার জানান, পড়ুয়াদের যেমন অসুবিধা হচ্ছে, শিক্ষকদেরও তেমনই অসুবিধা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নপত্র পাঠানো, আবার পরীক্ষার পরে তাঁদের কাছ থেকে উত্তরপত্র ইমেলে আনানো— প্রতিটি পর্বেই একটা অনিশ্চয়তা কাজ করে। এর সঙ্গে খাতা দেখা, খাতার নম্বর অনলাইনে তোলা, সব কাজ শিক্ষকদেরই করতে হয়।
পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, ‘‘যে হেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এখনও কোনও ভেরিফায়েড ইমেল আইডি নেই, তাই তাঁরা কোন আইডি-তে প্রশ্নপত্র গ্রহণ করছেন, আর কোন আইডি থেকে উত্তরপত্র পাঠাচ্ছেন— সবটা নজরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। সেই সঙ্গে এই পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব শিক্ষকদের উপরে এসে পড়েছে। পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের কোনও ভূমিকা নেই।’’ পার্থপ্রতিমবাবু জানালেন, তাঁদের দাবি, ক্যাম্পাসে অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হলে তা-ই হোক। সেখানে শিক্ষকেরা নজরদারি চালাবেন।
কিছু দিন আগেই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখনই খুলবে না। চলতি সিমেস্টারের পঠনপাঠন অনলাইনেই চলবে। মার্চ মাসে অড সিমেস্টারের পরীক্ষাও অনলাইনে নেওয়া হবে। তবে এই অনলাইন পরীক্ষায় পড়ুয়াদের মূল্যায়ন ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। অনলাইনে পরীক্ষা কারা দিচ্ছেন, তা নিয়েও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
অনলাইন পরীক্ষায় পড়ুয়াদের মেধার যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনলাইন পরীক্ষাকে আদর্শ ব্যবস্থা বলে মনে করি না। বাস্তব কিছু সমস্যা রয়েছে। দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ, স্মার্টফোন অথবা ট্যাব না থাকার কারণে আগের পরীক্ষাগুলি যাঁরা দিতে পারেননি, তাঁদের বিষয়ে খুব সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দরকার।’’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সভাপতি পার্থিব বসু এ দিন বলেন, ‘‘প্রথমে দরকার কোভিড-বিধি মেনে ক্যাম্পাস খোলা। পঠনপাঠন শুরু করা। তার পরেই পরীক্ষার বিষয়টি আসবে।’’ ক্যাম্পাস খোলার আগে শিক্ষকদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন পার্থিববাবু।