শনিবার রাতে দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছিল গড়িয়াহাট মোড়ের এই বহুতল।
গড়িয়াহাটের গুরুদাস ম্যানসনের আগুন শর্ট সার্কিট থেকেই ছড়িয়েছিল! ওই বহুতলের পুড়ে যাওয়া জায়গা ঘুরে দেখে এবং সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহের পর প্রাথমিক ভাবে ফরেন্সিকের সেটাই অনুমান। পাশাপাশি দমকলমন্ত্রীর দাবি, বাড়িটির ‘ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট’ ছিল না। যদিও সোমবার রাত পর্যন্ত দমকলের তরফে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
লালবাজার সূত্রে খবর, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রাথমিক ভাবে আগুন বহুতলের ভিতরের একটি মিটার বক্স থেকে ছড়িয়েছিল। বাইরে একটি ফিডার বক্সেরও নমুনা নিয়েছেন তাঁরা। যা পরীক্ষা করার পরেই পরিষ্কার হবে আগুনের মূল উৎস এবং কারণ। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, শর্ট সার্কিটের মাত্রা ব্যাপক ছিল। যা থেকে তৈরি হয়েছিল প্রায় হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। যা সোজা পৌঁছে যায় দোতলার একটি ফ্ল্যাটে। একই সঙ্গে বিদ্যুতের তার থেকে আগুন ফুটপাতে হকারদের প্লাস্টিকের ছাউনিতে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, ওই গুরুদাস ম্যানসন থেকেই ওই বহুতলের সামনে বসা হকারদের দোকানের বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছিল। পুলিশ ও দমকলের একটি সূত্রের দাবি, দোতলার সব ক’টি ফ্ল্যাট ও দোকানের এসি মেশিন , দোকানের জেনারেটরগুলি ছিল বাইরের দিকে। ফলে আগুন দোতলায় ছড়াতেই আগে সেগুলি এসি মেশিন এবং জেনারেটরে ছড়িয়ে পড়ে। দু’টি শাড়ির দোকানে মজুত ছিল প্রচুর সিল্ক জাতীয় শাড়ি। এক দিকে দাহ্য বস্তুর স্তূপ। অন্য় দিকে আধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার অভাব। দু’ই মিলিয়ে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দমকলও জানিয়েছে, বড় বড় দোকানগুলিতেও ছিল না কোনও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের চার ইঞ্জিনিয়ার। পুরসভার একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই পরিদর্শক দল জানায়, নির্মাণের কোনও সমস্যা এখনও তাঁদের চোখে পড়েনি। তবে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের দিকের একটি গাড়ি-বারান্দার থাম বসে গিয়েছে। ফলে ওই অংশ ভাঙতে হতে পারে। যদিও ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ১৬১এ রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের একটি শাড়ির দোকানের পাশের দেওয়ালে বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। পুরসভা, ফরেন্সিকের পাশাপাশি দমকলও আলাদা ভাবে গুরুদাস ভবনের আগুন নিয়ে একটি রিপোর্ট দেবে বলে জানিয়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘‘গড়িয়াহাটের বাড়িটির ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট কিছু ছিল না। আমরা আইনের পথ ধরে যা করার করব।’’