অব্যবস্থা: পুরভবনের চারতলায় ও জন্ম-মৃত্যুর শংস্যাপত্র বিভাগের সামনে পড়ে থাকা জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার সদর দফতরের মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকলেই দেখা যাবে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র বিভাগের সামনের অলিন্দে মজুত করা বড় বড় বস্তাবন্দি কাগজপত্র। কোথাও পড়ে ভাঙাচোরা কাঠের আসবাবপত্র। কোথাও আবার স্তূপ করে রাখা আবর্জনা! মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার পরেই কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের বিভিন্ন তলা থেকে এই আবর্জনার স্তূপ সরানোর কথা বলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। আগুন লাগার মতো বড়সড় দুর্ঘটনা এড়াতেই ওই জঞ্জাল সরানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তার পরে দু’বছর কেটে গেলেও এখনও সরেনি আবর্জনা ও বাতিল আসবাব।
অতীতে শহর কলকাতায় একাধিক জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের পরে সরকারি তরফে অজস্র কমিটি হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী একাধিক সরকারি, বেসরকারি ভবন
পরিদর্শনও করা হয়েছে। অভিযোগ, শহরের অধিকাংশ সরকারি, বেসরকারি বহুতলে এখনও পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এস এন ব্যানার্জি রোডের ঠিকানায় কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের আনাচেকানাচে ঘুরলে টের পাওয়া যাবে, অগ্নি-নির্বাপণের ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’ দশা! বিজেপি পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘পুর ভবনের ইতিউতি এই সমস্ত অব্যবহৃত সামগ্রী পড়ে থাকাটা বিপদ তো বটেই, পাশাপাশি দৃষ্টিকটুও। অনেক মানুষ এখানে আসেন। পুরভবনের হতশ্রী ছবি দেখে যে কেউ লজ্জা পাবেন। অবিলম্বে এই সমস্ত সামগ্রী সরিয়ে ফেলা দরকার।’’ পুরভবনের দোতলা, তেতলার বারান্দায় স্তূপ হয়ে পড়ে থাকা পুরনো সামগ্রী থেকে যে কোনও দিন বিপদ ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পুরকর্মীদের একাংশও। পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, প্রতিটি তলায় অগ্নি-নির্বাপণের জন্য কার্বন ডাই-অক্সাইডের সিলিন্ডার রয়েছে ঠিকই। কিন্তু যে ভাবে প্রতিটি তলায় আবর্জনা, আসবাবপত্র জমে রয়েছে, তাতে আগুন লাগলে বিপদ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে দিনের বেলায় পুরভবনে আগুন লেগেছিল। তবে সে আগুন খুব বেশি ছড়াতে পারেনি। পুরকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতিটি তলায় যে ভাবে অব্যবহৃত সামগ্রী জমে রয়েছে, তাতে কখনও রাতে আগুন লাগলে ভয়ানক কাণ্ড হবে। কলকাতা পুরভবনের ইলেক্ট্রিকের তার বিভিন্ন তলায় কুণ্ডলী পাকিয়ে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। ইলেক্ট্রিক ওয়্যারিংয়ের ব্যবস্থাও আধুনিক নয়। এই পরিস্থিতিতে পুরভবনের প্রতিটি তলা থেকে বস্তাবন্দি আবর্জনা অবিলম্বে সরিয়ে ফেলার আর্জি জানাচ্ছেন পুরকর্মীরা। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন মেয়র পুরভবনের প্রতিটি দফতর পরিদর্শনে গিয়ে অফিসের আনাচে-কানাচে জমে থাকা আবর্জনা দ্রুত সরাতে নির্দেশ দেন। ফিরহাদ বলছেন, ‘‘পুরভবনের প্রতিটি তলায় জমে থাকা আবর্জনা শীঘ্রই সরিয়ে ফেলা হবে।’’