ফাইল ছবি
যাত্রী সেজে গাঁজা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করল রেল পুলিশ। সোমবার দুপুরে মেন লাইনে শিয়ালদহগামী লোকাল ট্রেনের কামরার মধ্যে নাটকীয় ভাবে গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। হতবাক হয়ে যান যাত্রীরা।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম কল্যাণী দাস ও সোমা দাস। নদিয়ার চাকদহের কাছে সান্যাল চরের বাসিন্দা ওই দু’জন এ দিন চাকদহ থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন গাঁজার তিনটি বড় প্যাকেট নিয়ে। সেগুলি সেলোটেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রেল পুলিশ আগে থেকেই নৈহাটি স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। ট্রেন নৈহাটি স্টেশন ছাড়ার পরেই কল্যাণী ও সোমাকে আটক করে কামরার মধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন তদন্তকারীরা। প্রথমে অস্বীকার করলেও পুলিশি জেরায় গাঁজার প্যাকেটগুলি সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে বার করে দেন তাঁরা। কাঁকিনাড়া স্টেশনে দুই মহিলাকে ট্রেন থেকে নামানো হয়। প্ল্যাটফর্মে বসিয়ে দীর্ঘ জেরার পরে তাঁরা জানান, বিধাননগরে ওই গাঁজার প্যাকেটগুলি কাউকে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। রেল পুলিশের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘তিনটি প্যাকেট মিলিয়ে ছ’কেজির কিছু বেশি গাঁজা উদ্ধার হয়েছে। ধৃতেরা ক্যারিয়ারের কাজ করছিলেন। এর আগেও এই ভাবে তাঁরা গাঁজা পাচার করেছেন বলে খবর ছিল। সেই অনুযায়ী অভিযান চালানো হয়।’’
উল্লেখ্য, গাঁজা পাচারের ঘটনায় গত এক বছরে বেশ কয়েক জন ইছাপুর, শ্যামনগর থেকেও ধরা পড়েছেন। সকলেরই বাড়ি সান্যাল চর এলাকায়। নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গঙ্গা তীরবর্তী ওই এলাকাটি এক সময়ে হুগলি জেলার মধ্যে থাকলেও বর্তমানে সেটি নদিয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ভৌগোলিক ভাবে এর অবস্থান এমনই যে, সেখানকার বাসিন্দারা হুগলি জেলার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন। সেখান থেকে সহজেই নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলির বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়। প্রান্তিক অঞ্চল হওয়ায় পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারিও অনেকটা কম থাকে এই এলাকায়। গাঁজা ব্যবসায়ীরা মূলত দরিদ্র পরিবারের মাঝবয়সি মহিলাদেরই ক্যারিয়ার হিসাবে নিযুক্ত করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠায়। ধরা পড়লেও তাঁরা বিশেষ কিছু বলতে পারেন না।
রেল পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গাঁজা পাচারে বার বার সান্যাল চরের নাম উঠে আসছে। আমরা নদিয়া জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাব, ওই এলাকায় আরও কঠোর নজর রাখার জন্য।’’