এলাকার জলাশয়েই এ বার ‘গঙ্গারতি’র আমেজ পাবেন দমদমবাসী। ফাইল চিত্র।
এ বার কি পাড়ার ঘাটে ঘাটে বারাণসীর আরতির দৃশ্য দেখা যাবে? দক্ষিণ দমদম পুরসভার একটি জলাশয়ের ঘাটে আরতির সূচনা হতেই এমন প্রশ্ন ঘুরছে। এলাকার জলাশয়েই এ বার ‘গঙ্গারতি’র আমেজ পাবেন দমদমবাসী। এমনটাই অভিমত স্থানীয় সাংসদ এবং নির্দল পুর প্রতিনিধির। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তিন নম্বর হরকালী কলোনির দেবীঘাটে বুধবার সন্ধ্যায় এই আরতি প্রকল্পের সূচনা হয়।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর ভারতের মতোই কলকাতার গঙ্গা তীরবর্তী ঘাটগুলিতে সন্ধ্যায় আরতি চালু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অথচ দমদম থেকে গঙ্গা খানিকটা দূরে। তাই বলে কি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানা যাবে না? অতএব স্থানীয় জলাশয়ের ঘাটেই আরতি শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিলেন স্থানীয় নির্দল কাউন্সিলর। এ দিন সন্ধ্যারতির সূচনা করেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায়। পাশাপাশি এ দিনের অনুষ্ঠান আরও এক বার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলের রসায়নটাই বা কী?
অন্য দিকে এই অনুষ্ঠান ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, এমন অনুষ্ঠানের নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। তবে সেই অভিযোগ খণ্ডন করেছেন স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ।
ওই ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত) এ দিন জানান, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেকে মান্যতা দিয়ে এই আয়োজন হয়েছে। দমদম গঙ্গা তীরবর্তী নয় বলে কি বাসিন্দারা সন্ধ্যারতি দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন? তাই স্থানীয় জলাশয়েই উত্তর ভারতের ধাঁচে আরতি চালু হল। সাংসদ জানান, তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের এক জায়গায় সপ্তাহে এক দিন গঙ্গার তীরে সন্ধ্যারতি হয়। দক্ষিণ দমদমের অন্যান্য ওয়ার্ডেও এমন করার আহ্বান জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা পলাশ দাশের মন্তব্য, ‘‘মেরুকরণের রাজনীতি তৃণমূল ও বিজেপি বহু দিন ধরেই করছে। অথচ উন্নয়নের প্রশ্নে সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকার।’’ বিজেপি নেতা গৌতম সাহা মণ্ডলের কথায়, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। আতঙ্কে রাজ্য জুড়ে আরতি পুজো পাঠ শুরু হয়েছে। সেখানে দক্ষিণ দমদম ব্যতিক্রম নয়।’’ কংগ্রেস নেতা তাপস মজুমদারের মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গার ঘাটে সন্ধ্যারতি শুরু করার কথা বলেছিলেন। এ বার পাড়ায় পাড়ায় সেটাই শুরু হবে।’’
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে সাংসদের পাল্টা মন্তব্য, জল নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষ কাজে লাগবে এই ধরনের প্রকল্প। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘উত্তর ভারতে গঙ্গার ঘাটগুলি সংস্কার হচ্ছে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে। কলকাতায় তা হবে না কেন?’’