প্রতীকী ছবি।
অনলাইনে জানা গিয়েছিল, বাড়িতে এসে প্রতিষেধক দিচ্ছেন কোনও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিরা। ওই সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরে দুই পরিবারের মোট পাঁচ জনকে বাড়িতে এসে প্রতিষেধক দিয়ে গিয়েছিল এক ব্যক্তি। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু গোল বাধল প্রতিষেধক নেওয়ার কোনও এসএমএস না আসায়। বিষয়টি জানাতে ফের ওই প্ৰতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতিষেধক প্রাপকেরা। কিন্তু অভিযোগ, বেশ কিছু দিন কেটে যাওয়ার পরেও কোনও মেসেজ আসেনি। এর পরেই প্রতিষেধক দেওয়ার নাম করে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই পাঁচ জন।
পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযোগকারী এক জন মহিলা। তিনি ফুলবাগান এলাকার সুরেন সরকার রোডের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে আরও চার জন প্রতারিত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন। ওই মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার প্রতারণা এবং সংক্রমণ ছড়ানোর একাধিক ধারায় কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি) ফুলবাগান থানায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগের তির মধ্য কলকাতার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দিকে। অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, সেখানকার প্রতিনিধি সেজে এক যুবক গত ৩ মে ওই পাঁচ জনকে বাড়িতে গিয়ে প্রতিষেধক দিয়ে আসে। যার জন্য মাথাপিছু ৩০০ টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু প্রতিষেধক নেওয়ার পরে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারি কোনও এসএমএস আসেনি প্রাপকদের ফোনে। অভিযোগ, বার বার জানানো সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ওই সংস্থা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারীদের আশঙ্কা, প্রতিষেধকের বদলে তাঁদের শরীরে অন্য কিছু ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। কী দেওয়া হয়েছে, তা ওই যুবককে ধরে জেরা করলেই জানা যাবে। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িতে গিয়ে প্রতিষেধক দেওয়ার কোনও নিয়ম এখনও চালু হয়নি। তাই সরকারি নিষেধ অমান্য করার ধারাও ওই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য স্লট পেতে রোজই চরম হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পুলিশের অনুমান, পরিস্থিতির এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছে প্রতারকেরা। এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা যে ঘটতে পারে, সে ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছিল বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় সংস্থা।
পুলিশের এক কর্তা জানান, প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য রেজিস্টার করার একমাত্র সরকারি ওয়েবসাইট হল ‘কোউইন’। কোথায় প্রতিষেধক মিলবে, তা ওই ওয়েবসাইট থেকেই জানা যায়। আর বাড়িতে গিয়ে প্রতিষেধক দেওয়ার কোনও নিয়ম এখনও চালু হয়নি বলেই জানান তিনি।