প্রতীকী ছবি
পুলিশ পরিচয় দিয়ে বারাসতের এক সোনার ব্যবসায়ীর কর্মীকে অপহরণ করে লুটের ঘটনায় মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হল। খোঁজ চলছে বাকিদের। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অপহরণে ব্যবহার করা গাড়িটিও। বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছিল এক অভিযুক্তকে। বাকি তিন জনকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করেছে জোড়াবাগান থানার পুলিশ।
লেক টাউন থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া ধৃতদের নাম রঞ্জন দাস, সঞ্জু দাস এবং সুখপদ মণ্ডল। পুলিশ জানিয়েছে, রঞ্জন এবং সঞ্জু সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তাদের বাড়ি কালিন্দীতে। সুখপদের বাড়ি চিৎপুরে। বুধবার কাশীপুর থেকে ধরা হয় তৌসিফ খান নামে আর এক জনকে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। তবে উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া জিনিস। সূত্রের খবর, এই চক্রের মূল চাঁই সোনাগাছির বাসিন্দা। তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সঞ্জু গাড়ি চালাচ্ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৭ মার্চ বিকেলে বারাসতের এক সোনার ব্যবসায়ীর কর্মী লোকনাথ রাজবংশী জোড়াবাগান থানা এলাকার গরানহাটা থেকে আট কিলোগ্রাম রুপো এবং মূল্যবান পাথর নিয়ে বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ের মোড়ে অটো ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে একটি গাড়ি তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে নেমে আসা কয়েক জন ব্যক্তি পুলিশ পরিচয় দিয়ে লোকনাথের ব্যাগ পরীক্ষা করতে চায়। এবং তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, রুপো এবং পাথরের ব্যাগটি কেড়ে নিয়ে রামমন্দিরের কাছে লোকনাথকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পালায় অভিযুক্তেরা। পুলিশ প্রথমে চুরির মামলা দায়ের করলেও পরে অপহরণ এবং ডাকাতির ধারা যুক্ত করে।
তদন্তে আরও জানা যায়, দুষ্কৃতীরা শুধু একটি গাড়িতেই ছিল না, তাদের সঙ্গে একটি মোটরবাইক এবং একটি স্কুটারও ছিল। মোট আট জন এসেছিল সে দিনের ‘অপারেশনে’। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ তৌসিফকে চিহ্নিত করে। একই সঙ্গে একটি গাড়ির নম্বরও জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সেই মতো প্রথমে তৌসিফ ও পরে বাকিরা গ্রেফতার হয়।
এক তদন্তকারী জানান, ওই দলটি লকডাউনের আগে পুলিশ পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েকটি অপরাধ করেছিল। ধৃতদের জেরা করে সে সব জানার চেষ্টা চলছে। এর আগে চিৎপুর, পোস্তা, তালতলা, মুচিপাড়া-সহ কয়েকটি জায়গায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে লুটের অভিযোগ উঠেছিল। তাতে কয়েক জন পুলিশকর্মী গ্রেফতারও হন। জোড়াবাগানের এই ঘটনার পিছনে কোনও পুলিশকর্মী যুক্ত রয়েছেন কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। এর আগে ক্রাইম বৈঠকে পুলিশকর্তারা ওই ঘটনা নিয়েই একাধিক বার আলোচনা করেছিলেন।