সূচনা: ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ’-এর নতুন ভবনের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সঙ্গে ওই হাসপাতালের অধিকর্তা চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
জমি সংক্রান্ত প্রায় ৬৫ বছরের জটিলতা কাটিয়ে শিশুদের আরও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে নতুন ভবন তৈরির পদক্ষেপ করল ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ’। বৃহস্পতিবার সেই ভবনের শিলান্যাস করলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। ছিলেন পার্ক সার্কাসের ওই হাসপাতালের অধিকর্তা শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ-সহ অনেকেই।
প্রায় চার বিঘা জমির উপরে পার্ক সার্কাসের ওই শিশু হাসপাতালটি তৈরি করেছিলেন শিশুরোগ চিকিৎসক ক্ষীরোদচন্দ্র চৌধুরী। ১৯৫৭ সালের ১৬ জানুয়ারি হাসপাতালের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। ওই সময় থেকেই হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন কৃষ্ণা বসু। পরবর্তী সময়ে তিনি ওই শিশু হাসপাতালের সভাপতি ছিলেন। তিনি এবং তাঁর স্বামী তথা ওই হাসপাতালের এক সময়ের অধিকর্তা শিশুরোগ চিকিৎসক শিশির বসুর স্বপ্ন ছিল, আর্থসামাজিক ভাবে দুর্বল শিশুদের কাছে আরও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।
এ দিন শিলান্যাসের পরে অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘পুরনোতিনতলা ভবনের শিশুদের ওয়ার্ডটির অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। অবশেষে রাজ্য সরকার ও পুরসভার সহযোগিতায় স্বপ্ন পূরণের পথে এগোতে পারছি। নতুন হাসপাতাল ভবন তৈরির জন্য অনেক শুভানুধ্যায়ী এগিয়ে এসেছেন। আশাকরি দু’-তিন বছরের মধ্যে নতুন ভবনটি হয়ে যাবে।’’ এখনকার তিনতলা ভবনে ২২০টি শয্যা রয়েছে। নতুন ১১তলা ভবনেথাকবে মোট তিনশো শয্যা। অস্ত্রোপচার থেকে যাবতীয় উন্নত পরিষেবা ওই নতুন ভবন থেকেই মিলবে। তবে বর্হির্বিভাগ চলবে পুরনো ভবনেই। পাশাপাশি সেখানে নার্সিং কলেজটি স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান, ওই মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি শিশু হাসপাতালের ডেপুটি চিফ অপারেটিং অফিসার আরাধনা ঘোষ চৌধুরী। এখন ওই হাসপাতালে নার্সিংয়ের বিএসসি ও জিএনএম কোর্সে ১২০টি আসন রয়েছে। এ বার এমএসসি কোর্সও চালু হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পুরনো ভবনের পাশেই রয়েছে এক বিঘা জমি। ১৯৬৫ সালে স্থানীয় এক ব্যক্তি জমিটি দিয়েছিলেন ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ’ কর্তৃপক্ষকে। সেখানেই হবে নতুন ভবন। দু’টি জায়গাতেই ঢোকার রাস্তা এক। তবে পুরনো ভবনের নকশা থাকলেও দলিলটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। যার ফলে সমস্যা হচ্ছিল। এ দিন ফিরহাদ বলেন, ‘‘জমিটির নথি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে পুরসভা উদ্যোগী হয়। প্রধানমন্ত্রী যে হাসপাতালের উদ্বোধন করেছিলেন তার নথি নেই, সেটা তো হতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে সকলে আলোচনা করি। শেষে সমস্যা মেটে।’’ তিনি আরও জানান, পুরনো ভবনের জমিটি ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ’-র নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে।
অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘পুরনো ভবনের জমির নথি নিয়ে সমস্যা মিটতেই নতুন ভবন তৈরির পথও খুলে গিয়েছে।’’ এই নতুন ভবন শিশুদের চিকিৎসায় ‘আশার কিরণ’ ফুটিয়ে তুলবে বলে দাবি ফিরহাদেরও।