ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন মেয়র।
অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি আসবেন না। ভোটগ্রহণ পর্ব এক ঘণ্টা অতিক্রান্তও হয়ে গিয়েছিল। ঘড়ির কাটা পৌঁছে গিয়েছে সওয়া দুটোর ঘরে। পুরসভায় গুঞ্জন শোভন চট্টোপাধ্যায় আর আসবে না। করিডরে দাঁড়িয়ে পুরসভারই এক আমলা আর এক জনকে বলছিলেন, “শোভনদা আসবেন না মনে হয়। নিজের ইস্তফাই দিতে আসেননি। ফিরহাদকে ভোট দিতে আসবেন? তা হয় নাকি!”
কথা শেষ হয়নি। ঠিক সেই সময়ে শোভনের গাড়ি এসে দাঁড়াল পুরসভার প্রধান গেটে। পুরকর্মীদের মধ্যে হঠাৎ যেন উত্তেজনার ঢেউ বয়ে গেল। কেউ কেউ ‘শোভনদা, শোভনদা’ বলে স্লোগানও দিতে লাগলেন। সেই দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল তিনি এখনও মেয়রই রয়েছেন!
সোমবার পুরসভার সদর দফতরে পা দেওয়া থেকে শুরু করে ভোটদান, এমনকি শেষ বারের মতো সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাওয়া— তাঁকে এক বারের জন্যেও গম্ভীর মুখে দেখা যায়নি। বরং যাওয়ার সময় তাঁকে যেন কিছুটা বেশিই হাসিখুশি দেখাচ্ছিল। করিডর দিয়ে যাওয়ার সময় কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেন। কে, কেমন রয়েছেন— খোঁজ নিলেন। সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি এতটুকুও মেজাজ হারাননি। হাসতে হাসতে ভোট দিতে চলে গেলেন।
আরও পড়ুন, মেয়র হলেন ফিরহাদ, ভোট বয়কট বাম-কংগ্রেসের
ভোট দিয়ে এসে বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন। তখন চেয়ারপার্সন মালা রায়ের ঘরের সামনে বিরোধী বামেরা বিক্ষোভ অবস্থানে বসেছিলেন। প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন। আচমকাই সে দিকে চলে যান শোভন।
কেন তাঁরা এখানে বসে রয়েছেন, তা বিরোধী দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদারের কাছে জানতে চান। দু’জনের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথাবার্তাও হয়। এর পর তিনি মালা রায়ের ঘরে চলে যান। পরে সাংবাদিকদের হাসতে হাসতে বলেন, “আমি এখনও কাউন্সিলর রয়েছি। যখন, যেমন দরকার পড়বে আমি সাহায্য করব।”
আরও পড়ুন, মেয়র হয়েই কলকাতার নাগরিকদের নিজের ফোন নম্বর দিলেন ফিরহাদ
করিডর ধরে মেয়রের ঘরের সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছেন যখন, এক বারের জন্য তিনি সে দিকে তাকালেন না। যে ঘরে তিনি আট বছর কাটিয়েছেন, সে দিকে না তাকিয়ে অভিমানেই যেন সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হাত নাড়লেন। মুখের হাসি কিছুটা মলিন হয়ে গিয়েছে। তবু তিনি হাসছেন। গাড়িতে উঠে সেই চেনা কায়দায় হাত নাড়তে নাড়তে পুরসভা ছেড়ে বেরিয়েও গেলেন!
(কলকাতার এই মুহূর্তের শিরোনাম কী - জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)