ব্যবস্থা: চলছে সিংহের ঘেরাটোপের রেলিংয়ের উচ্চতা বাড়ানোর কাজ। শনিবার, আলিপুর চিড়িয়াখানায়। রণজিৎ নন্দী
আলিপুর চিড়িয়াখানায় সিংহের খাঁচায় এক যুবকের ঢুকে পড়ার ঘটনায় রিপোর্ট তলব করল বন দফতরের বন্যপ্রাণ শাখা। সূত্রের দাবি, রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপালের (বন্যপ্রাণ) দফতর থেকে ওই ঘটনার সবিস্তার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। শুক্রবার ঘটনার পরেই প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদ যাদব আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য জ়ু অথরিটির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও সূত্রের দাবি। শনিবার চিড়িয়াখানায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জ়ু অথরিটির সদস্য-সচিব সৌরভ চৌধুরী।
শুক্রবার সিংহের এনক্লোজ়ারে ঢুকে পড়েন গৌতম গুছাইত নামে এক যুবক। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাসিন্দা। মারাত্মক কোনও ঘটনা ঘটার আগেই অবশ্য ‘বিশ্বাস’ নামের সেই সিংহটিকে সরিয়ে গৌতমকে উদ্ধার করেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। উঁচু পাঁচিল থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর কোমরেও চোট লেগেছিল। গৌতমকে এসএসকেএম হাসপাতালের জেনারেল সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অভিমন্যু বসুর অধীনে ভর্তি করানো হয়। এ দিন হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গৌতম ভাল আছেন। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, সিংহটি তার ডেরায় ঢুকে পড়া ‘আগন্তুকের’ উপরে সে ভাবে হামলা করেনি। তা হলে প্রাণহানিও ঘটতে পারত। কিছুটা বিস্ময়ভরেই ‘আগন্তুকের’ গায়ে থাবা বুলিয়ে পরখ করতে গিয়েছিল সে।
সিংহের খাঁচায় আগন্তুকের প্রবেশের পর থেকেই পশুরাজের ডেরার সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। তবে এ দিন অবশ্য সিংহ বা সিংহী, কাউকেই খোলা জায়গায় ঘুরতে দেখা যায়নি। সূত্রের দাবি, এনক্লোজ়ারে কিছু ‘মেরামতির’ কাজ চলায় পশুরাজ বিশ্বাস বা তাঁর সঙ্গিনী শ্রুতিকে বাইরে আনা হয়নি।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, সিংহের এনক্লোজ়ারের নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এক পাশের রেলিংয়ের উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে। সূত্রের দাবি, শুক্রবার এনক্লোজ়ারের এক পাশে থাকা ছোট গেট টপকে পাঁচিলের উপরে উঠে গিয়েছিলেন গৌতম। সেই গেটের রেলিংয়ের উচ্চতাও বাড়ানো হচ্ছে। লাগানো হবে কাঁটাতারও। এনক্লোজ়ারের সামনে অবশ্য দু’টি পাঁচিল রয়েছে এবং রয়েছে চওড়া পরিখাও। ফলে সে দিকে নিরাপত্তার সমস্যা নেই বলেই মনে করছেন চিড়িয়াখানার কর্তারা।
তবে চিড়িয়াখানার রক্ষীদের নজরদারিতে ‘ফাঁক’ রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। বন দফতরের একটি সূত্রের দাবি, রক্ষীদের পাশাপাশি চিড়িয়াখানায় একটি ‘স্বেচ্ছাসেবক’ বাহিনীও রয়েছে। তবে তাঁরা ঠিক কী করেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে।