বিস্ফোরণে লন্ডভন্ড ঘর। — নিজস্ব চিত্র।
গভীর রাতে কেষ্টপুরে এক পুলিশ অফিসারের বাড়িতে বিস্ফোরণ। আর সেই বিস্ফোরণ ঘিরেই দানা বেঁধেছিল রহস্য। শেষ পর্যন্ত সেই রহস্য ভেদ করল ফরেনসিক বিভাগ। কিন্তু, বিস্ফোরণের জেরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জখম হন ওই পুলিশ অফিসারের স্ত্রী। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাগুইআটি থানার কেষ্টপুরের হানাপাড়ায় একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সাব-ইনস্পেক্টর দেবাশিস রায়। শুক্রবার রাত একটা নাগাদ তাঁর ফ্ল্যাটের রান্না ঘর থেকে বিকট আওয়াজ আওয়াজ শোনা যায়। দেবাশিসবাবু জানান, সে সময় রান্না ঘরে তাঁর স্ত্রী স্বাতীদেবী ছিলেন। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন তিনি। আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজনও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে প্রায় গোটা এলাকা কেঁপে উঠেছিল ওই রাতে। দেবাশিসবাবুর বাড়ির ছবি থেকেও সেটা স্পষ্ট। বিস্ফোরণে জেরে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ঘর। ভেঙে বেরিয়ে আসে জানলার কাচ। এমনকি বিস্ফোরণের তীব্রতায় দরজার ফ্রেমও খুলে বেরিয়ে যায়। দেওয়ালেও ফাটল দেখা দেয়। তবে এত ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরও দেবাশিসবাবুর বাড়িতে কোনও পোড়া চিহ্ন মেলেনি। শুধু দুটো পোড়া কাপড়ের টুকরো পাওয়া গিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বউবাজার বিপর্যয়ে ক্ষতিপূরণ, ১৯ পরিবারকে চেক দিল মেট্রো
কী থেকে এমন বিস্ফোরণ? প্রাথমিক ভাবে তা নিয়েই ধন্দ দেখা দেয়। রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে এমন বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু, দেখা যায় সিলিন্ডার ফাটেনি। ফলে, সেই তত্ত্ব খারিজ হয়ে যায়। তাতে রহস্য আরও বেশি করে দানা বাঁধতে থাকে। এর পর ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক দল। প্রাথমিক তদন্তের পর, ফরেনসিক দলের আধিকারিকরা জানান, গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরে গন্ডগোল ছিল। আর সেখান থেকেই গ্যাস লিক করে তা বদ্ধ ঘরে জমতে থাকে। এলপিজি সিলিন্ডারের বাইরে বেরিয়ে বাষ্পের চেহারা নেয়। দেবাশিসবাবুর স্ত্রী রাতে ঘরে ঢুকে লাইটার জ্বালাতেই সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এই বিস্ফোরণকে এলপিজি ভেপার ক্লাউড এক্সপ্লোশন বলেই জানিয়েছেন। স্বাতীদেবীর বয়ানও নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাতে কেষ্টপুরে পুলিশ অফিসারের বাড়িতে রহস্যজনক বিস্ফোরণ, কেঁপে উঠল এলাকা