ভারী: বস্তা চাপিয়ে ফুট ওভারব্রিজের ভার বহন ক্ষমতার পরীক্ষা করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
প্রথমে ঠিক হয়েছিল, ভেঙে ফেলা হবে। কিন্তু সেই কাজ করতে হলে শিয়ালদহ এলাকার ব্যস্ততম রাস্তা অন্তত সাত দিন বন্ধ রাখতে হত। যা সম্ভব নয়। তখন ঠিক হয়, ভাঙার পরিবর্তে নতুন করে সংস্কার ও মেরামত করা হবে। সেই মতোই সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপি মডেল) নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কারের কাজ করেছে কলকাতা পুরসভা। কাজ ঠিক মতো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য সেখানে রবিবার ভার বহন পরীক্ষাও হল বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ওই দিন মোট ৪০ টন বালির বস্তা চাপানো হয়েছিল। সেগুলি চাপিয়ে রেখে প্রায় ১৫ ঘণ্টা পরখ করে দেখে সোমবার তা ‘আনলোড’ করা হয়।
প্রাথমিক ভাবে ভার বহন পরীক্ষা বা ‘লোড টেস্টিং’-এ কোনও সমস্যা হয়নি বলেই এ দিন জানিয়েছে সংস্কারের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থা। ওজন চাপানোর পরে ফুট ওভারব্রিজের কাঠামোর স্থানিক কোনও বিচ্যুতি (ডিফ্লেকশন) হয়েছে কি না, তা মিলিয়ে দেখা হয়েছে গাণিতিক হিসাবের সঙ্গে। তাতে আপাতত কোনও ত্রুটি ধরা পড়েনি।
এমনিতে প্রায় ২৫ বছরের পুরনো ওই ফুট ওভারব্রিজের কাঠামো পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিবপুর আইআইইএসটি-র মতামতও নেওয়া হয়েছিল। এই ফুট ওভারব্রিজটি কলকাতার ব্যস্ততম জায়গায় হওয়ায় সেখানে একসঙ্গে ৪০০-রও বেশি মানুষ উঠলে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটাই ভার বহন পরীক্ষার সময়ে মাথায় রাখা হয়েছিল। সেই কারণেই ৪০ টন বস্তা চাপিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
কাঠামোগত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ এই ফুট ওভারব্রিজটি রাস্তা থেকে প্রায় ছ’মিটার উপরে। তার উপরে একটি বক্স বিম (যেখান দিয়ে লোকজন যাতায়াত করেন) রয়েছে। সেটি অবশ্য পুরনো। তার উপরে নতুন ভাবে ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানাচ্ছে সংস্কারের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাটি। যাতে বৃষ্টি হলে ফুটব্রিজ দিয়ে চলাচলের সময়ে ভিজতে না হয়, অথবা গরমে চড়া রোদ মাথায় না পড়ে।
তবে এই ফুট ওভারব্রিজটিতে ভবিষ্যতে এসক্যালেটর বসানোর কথা ভাবা উচিত বলে জানাচ্ছেন প্রকল্পের মুখ্য পরামর্শদাতা, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বজিৎ সোম। তাঁর কথায়, ‘‘এই ফুট ওভারব্রিজটিতে উঠতে গেলে প্রায় আড়াই তলা উঠতে হয়। যেটা অনেকের ক্ষেত্রেই সমস্যার। সেই কারণে এখানে এসক্যালেটরের ব্যবস্থা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।’’ তা হলে পরিকল্পনার মধ্যে
এসক্যালেটর কেন রাখা হয়নি? প্রশ্নের উত্তরে বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘এসক্যালেটরের জন্য এখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে জায়গা বার করা গেলে এসক্যালেটর বসানো যেতে পারে।’’
তবে ওজন পরীক্ষার কাজ করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে। সাধারণত সংশ্লিষ্ট রাস্তা বা এলাকা বন্ধ করে এই কাজ করতে হয়। কিন্তু ব্যস্ত রাস্তা বন্ধের অনুমতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা নিয়েই কাজটি করতে হয়েছে।