প্রতীকী ছবি।
একটি বিখ্যাত লোকগানে লেখা ছিল, ‘‘সবাই আমায় ছাড়ি গেল, মশা না যায় ছাড়ি’’।
রবিবার রাতে বিমানে চেপে কলকাতা ছাড়তে চাওয়া বহু যাত্রী হাড়ে হাড়ে টের পেলেন মশা সহজে পিছন ছাড়ে না। শুধুমাত্র মশার উৎপাতেই বিমান উড়তে দেরি হয়ে গেল কলকাতা বিমানবন্দরে। বিমানের ভিতরের যাত্রীদের অনেকেরই তখন মশার কামড়ে হাত-পা ফুলে ওঠার অবস্থা। শেষ পর্যন্ত তাঁদের চেঁচামেচিতে ১৫ মিনিট কার্যত রানওয়ের উপরে দাঁড়িয়ে রইল বিমান। আর তার জেরে ওই বিমানের পিছনে থাকা একাধিক বিমানও নির্ধারিত সময়ে উড়তে পারল না।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, রবিবার রাতে ইন্ডিগোর ওই বিমানটির বেঙ্গালুরু উড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিমানটি প্রথমে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)- এর অনুমতি পেয়ে ডেল্টা ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে রাজারহাটের দিকে প্রধান রানওয়ের মুখ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তার পরেই পাইলট এটিসিকে জানান, কিছু সমস্যার জন্য উড়তে কয়েক মিনিট দেরি হবে। পিছনে তখন কলকাতা থেকে উড়ে যাওয়ার জন্য আরও একাধিক বিমান লাইন করে দাঁড়িয়ে।
বেশ কয়েক মিনিট পরেও বিমান দাড়িয়ে থাকায় পাইলটকে তাড়া দিতেই এটিসির কাছে পৌঁছয় বিমানে মশার উৎপাতের খবর। পাইলট এটিসিকে জানান, বিমানের ভিতরে যাত্রীদের কেবিনে প্রচুর মশা ঢুকেছে। যাত্রীরা অত্যন্ত বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ। মশা না মেরে যাত্রীরা বিমান ছাড়ায় আপত্তি জানাচ্ছেন বলেও এটিসির কাছে খবর যায়।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ইন্ডিগোর বিমানটি রানওয়ের মুখে প্রায় ১৫ মিনিট দাঁড়িয়েছিল। মশা মারার পরেই সেটি কলকাতা ছেড়ে উড়ে যায়।
এ দিকে ইন্ডিগোর ওই বিমানের কারণে ডেল্টা ট্যাক্সিওয়ে আটকে পড়ে। তার জেরে পিছনে থাকা অন্য বিমানগুলিকে দূরের চার্লি ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে প্রধান রানওয়ে থেকে ওড়ার অনুমতি দিতে হয়। এর ফলে পরবর্তী বিমানগুলি প্রধান রানওয়েতে উঠেও বাধ্য হয় মুখ ঘুরিয়ে রাজারহাটের রানওয়ের দিকের প্রান্ত পর্যন্ত যেতে বাধ্য হয়। তার জন্য যেমন সময় নষ্ট হয়েছে, তেমনই অতিরিক্ত জ্বালানিও পুড়েছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই ঘটনার জেরে এ দিন কলকাতা থেকে আরও দু’টি বিমানেরও ছাড়তে দেরি হয়েছে।
সূত্রের খবর, টার্মিনাল থেকে বিমানটি রানওয়ের দিকে চলতে শুরু করার পরেই যাত্রীরা বিমানসেবীকাদের কাছে মশার কামড় নিয়ে অভিযোগ জানাতে শুরু করেন। বিমানবন্দর কর্তাদের অনুমান, বিমানটি যখন পার্কিং বে-তে যাত্রী তোলার কাজ করছিল, তখনই দরজা খোলা থাকায় বিমানে প্রচুর মশা ঢুকে পড়ে। অতীতে বিমানের ভিতরে যাত্রীরা মশার কামড় নিয়ে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু মশার কারণে বিমান দেরির ঘটনা ঘটেনি। সাধারণত বিমান ছাড়ার আগে যাত্রী কেবিনে সুগন্ধী ছড়ানো হয়। তাতে দু’-একটি মশা থাকলে মরে যায়। কিন্তু এ মশা এত বেশি ছিল যে স্প্রে তে কাজ হয়নি।