—প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল। সেই সঙ্গে পুরসভার কাজ বন্ধের নোটিস উপেক্ষা করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগও ছিল। শেষ পর্যন্ত পুরসভার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নির্মাণ সংস্থার পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল বিধাননগরের পুলিশ। যদিও এই ঘটনা নিয়ে বেশি মুখ খুলতে রাজি হয়নি প্রশাসন। পুলিশ শুধু জানিয়েছে, আগে দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতেই শনিবার ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, কৈখালি এলাকায় ওই নির্মাণস্থলে গত সাত-আট মাস ধরেই নির্মাণের কাজ চলছিল। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই নির্মাণ বেআইনি ভাবে হচ্ছিল। ওদের একাধিক বার জানানো হয়, কাজ বন্ধের নোটিসও দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কাজ বন্ধ হয়নি। গত সপ্তাহে পুরসভার তরফে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল।’’
বিধাননগর পুর এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নতুন কিছু নয় বলেই অভিযোগ। তবে বহু দিন পরে পুরসভার তরফে এমন কঠিন পদক্ষেপ করা হল। যদিও এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলার মতো কড়া নির্দেশ পুরসভার তরফে দেওয়া হবে কি না, তা পুর মহলের তরফে স্পষ্ট করা হয়নি। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে পুরসভার চেষ্টা অব্যাহত। কৈখালির ওই বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা নেওয়া তারই প্রমাণ। কোনও ধরনের বেআইনি কাজ হলে পুরসভা এমনই কঠিন পদক্ষেপ করবে। আমরা চাই, মানুষ যেন ফ্ল্যাট কিনে প্রতারিত না হন।’’
উল্লেখ্য, বিধাননগর পুর এলাকার ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনি বাড়ি নিয়ে দু’টি মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। দু’টি মামলাতেই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘর বাঁচানোর পাল্টা দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই সব বাড়ির বাসিন্দারা। কী ভাবে পুর প্রতিনিধিদের চোখের সামনেই ওই সব বহুতল তৈরি হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এর জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুর কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও। অভিযোগ, শাসক দলের ঘনিষ্ঠদের মদতে বিধাননগরের রাজারহাট অঞ্চলে তৈরি হওয়া বহু নির্মাণ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। এমনকি, বহুতল তৈরির পরে ভিতের ত্রুটির কারণে সেটি হেলে পড়়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া
হয়েছে। বিধাননগরে, বিশেষত রাজারহাটে ফ্ল্যাট কিনতে হলে পুরসভার ছাড়পত্র ছাড়া ক্রেতারা ব্যাঙ্কঋণ পাবেন না, এমন ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এ সব সিদ্ধান্ত ঘিরে বেআইনি নির্মাণ তৈরির চেষ্টা খানিকটা কমেছে বলেই দাবি পুরসভার। যদিও কৈখালির ওই নির্মাণটি হচ্ছিল একটি বন্ধ কারখানার ভিতরে। আধিকারিকদের দাবি, বহুতলটি তৈরির কাজ হলেও সেটির নকশা পুরসভার অনুমোদিত ছিল না। এমনকি, কারখানার জমির চরিত্রের পরিবর্তন করা হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।