মেট্রো কতৃিপক্ষকে জমি দিয়ে সমস্যার মাছ চাষিরা। — ফাইল চিত্র।
গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য পাটুলির কয়েকটি বিশাল জলাশয় মেট্রোর নির্মাণকারী সংস্থাকে শর্তসাপেক্ষে লিজ় দিয়েছিল মৎস্য দফতর। ঠিক ছিল, কাজ শেষ হলে ২০১৬ সালের মধ্যে চার হেক্টরের ওই ছ’টি জলাশয়কে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, সেই সময়সীমার পরেও কেটে গিয়েছে সাত বছর। অথচ, জলাশয়গুলিকে পূর্বাবস্থায় ফেরানো হয়নি। এমনকি, সেখানে এখনও পড়ে রয়েছে মেট্রোর সামগ্রী। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ওই সব জলাশয়ে মাছ চাষ বন্ধ থাকার ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা এখনও হাতে পাননি চাষিরা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
পাটুলির ওই জলাশয়গুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে আজ, সোমবার রাজ্য মৎস্য দফতরের আধিকারিকেরা সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবেন। দফতর সূত্রের খবর, ইএম বাইপাস লাগোয়া পাটুলির ওই জলাশয়গুলিতে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মৎস্য দফতর আগেই চাষিদের নিয়ে তৈরি করেছিল ‘বৃজি-পাটুলি মৎস্যজীবী সমিতি’। ২০১১ সালে রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) কর্তৃপক্ষ ওই ছ’টি জলাশয়ে মেট্রোর স্তম্ভ তৈরি করতে সেগুলি লিজ় নিয়েছিলেন। সেই মতো চুক্তি হয়েছিল মৎস্য দফতর, আরভিএনএল এবং সমবায় সমিতির মধ্যে। কিন্তু অভিযোগ, ২০১৬ সালে মেট্রোর কাজ শেষ না হওয়ায় এবং ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও না পাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছেন মাছ চাষিরা।
চুক্তির শর্ত ছিল, ২০১৬ সালের মধ্যে জলাশয়গুলিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রতি বছর মাছ চাষের গড় উৎপাদনের হিসাবে পাঁচ বছরের ক্ষতিপূরণ বাবদ চাষিদের ৮৪ লক্ষ টাকা দেওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু সমিতি এখনও পর্যন্ত পেয়েছে মাত্র ১৭ লক্ষ টাকা। ‘বৃজি-পাটুলি মৎস্যজীবী সমিতি’র চেয়ারম্যান গফুর হালদারের অভিযোগ, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী২০১৬ সালের মধ্যে জলাশয়গুলিকে আগের অবস্থায় এনে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও ওই সব জলাশয়ে আমরা মাছ চাষ করতে পারছি না। আরভিএনএল কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা সত্ত্বেওজলাশয় ফিরে পাচ্ছি না। এমনকি, ক্ষতিপূরণের টাকাও পাইনি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ২০১৬-র পরে সাত বছর পেরিয়ে গেলেও জলাশয়গুলিতে এখনও পড়ে রয়েছে মেট্রোর সামগ্রী। জলাশয়গুলি এখন কচুরিপানায় ভর্তি।
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ৭০ জন মাছ চাষি ওই জলাশয়গুলিতে মাছ চাষ করতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মাছ চাষ করতে না পেরে এবং ক্ষতিপূরণের টাকা না পেয়ে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বকেয়া টাকা মাছচাষিদের ফিরিয়ে দিতে আমরা আরভিএনএল কর্তৃপক্ষকে বার বার চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হচ্ছে না।’’ এই প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে আরভিএনএলের প্রকল্প-ম্যানেজার এ কে রায়কে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও উত্তর আসেনি।