প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রতিকূলতা কাটিয়ে অবশেষে ব্রেন ডেথ ঘোষিত চিকিৎসকের অঙ্গদান সম্ভব হল। করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে এটি শহরে প্রথম মরণোত্তর অঙ্গদান। চলতি বছরের নিরিখে অবশ্য এটি তৃতীয়।
দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে চোট পাওয়া, চিকিৎসক অমিয়ভূষণ সরকার বাইপাসের ধারে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত সোমবার চিকিৎসকেরা তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন। এর পরেই তাঁর চিকিৎসক পুত্র ও পুত্রবধূ, দু’জনেই বৃদ্ধের অঙ্গদান করতে চান। করোনার জন্য প্রথমে কিছুটা হলেও তাঁদের হোঁচট খেতে হয়। পরে ‘রিজিয়োনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন’-এর (রোটো) মাধ্যমে অঙ্গগ্রহীতার খোঁজ শুরু হয়। অমিয়বাবুর রক্তের গ্রুপ ছিল এবি-পজ়িটিভ। ওই রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল রয়েছে এমন গ্রহীতার খোঁজ শুরু হয় রাজ্যের কাছে থাকা তালিকা ধরে। কিন্তু দেখা যায়, লিভারের তালিকায় ওই রক্তের গ্রুপের কোনও গ্রহীতাই নেই। বিষয়টি জানানো হয় ‘ন্যাশনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন’-কে (নোটো)। ওই দিন বিকেলের মধ্যেই চার জন গ্রহীতা জোগাড় হয়ে যায়। সিদ্ধান্ত হয়, মঙ্গলবার সকালে অমিয়বাবুর কিডনি, লিভার ও হৃৎপিণ্ড সংগ্রহের অস্ত্রোপচার শুরু হবে।
অমিয়বাবুর বৌমা, চিকিৎসক গার্গী নন্দী বলেন, “এ দিন সকাল ৯টা থেকে অঙ্গ সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছিল। সকলে খুব সহযোগিতা করেছেন।” রোটো সূত্রের খবর, অমিয়বাবুর লিভার গিয়েছে গুরুগ্রামে। হৃৎপিণ্ড গিয়েছে হাওড়ার নারায়ণা হাসপাতালে। একটি কিডনি আর এন টেগোর হাসপাতাল এবং অন্যটি আলিপুরের সেনা হাসপাতালে গিয়েছে। তাঁর ত্বক পেয়েছে এসএসকেএম। রোটো-র যুগ্ম অধিকর্তা চিকিৎসক অর্পিতা রায়চৌধুরী বলেন, “করোনার প্রতিকূলতা কাটিয়ে অঙ্গদানের ব্যবস্থা করতে সফল হয়েছি। আমাদের সহকর্মী-চিকিৎসকের অঙ্গদানের জন্য তাঁর পরিজনেরা যে সদিচ্ছা দেখিয়েছেন, তা দেখে সকলের এগিয়ে আসা উচিত। করোনা পরিস্থিতিতেও নন কোভিড রোগীদের গুরুত্ব দিয়ে, ব্রেন ডেথ ঘোষণা করে অ্যাপোলো হাসপাতাল অঙ্গদানে সাহায্য করেছে।”