Firhad Hakim

মৃত্যুর কারণ জলে বিষক্রিয়া নয়, দাবিতে অনড় ফিরহাদ

কলকাতা পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলে দূষণের জেরে ভবানীপুর ও আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার মিলিয়ে মোট তিন জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে আগেই। অসুস্থও হয়েছেন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ০৭:২৯
Share:

ফিরহাদ হাকিম —ফাইল চিত্র

কলকাতা পুরসভার সরবরাহ করা পানীয় জলে দূষণের জেরে ভবানীপুর ও আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার মিলিয়ে মোট তিন জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে আগেই। অসুস্থও হয়েছেন অনেকে। তা সত্ত্বেও এই তিন জনের মৃত্যু পানীয় জলের দূষণের কারণে হয়েছে বলে মানতে নারাজ কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘জল খেয়ে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে থাকতেই পারেন। কিন্তু তার সঙ্গে মৃত্যুটা জুড়ে দেওয়া ভুল হচ্ছে।’’

Advertisement

এ দিন কলকাতা পুরভবনে জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি-কে পাশে বসিয়ে ফিরহাদ জানান, ভবানীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের ল্যাবরেটরিতে তা পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু সেই পরীক্ষায় পানীয় জলে বিষাক্ত কিছু পাওয়া যায়নি। ফিরহাদ বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই অত্যন্ত দুঃখের। এটা ঠিকই যে, এ শহরে জল সরবরাহের এত বড় ক্ষেত্রে কোথাও কোনও সংক্রমণ হবে না, এটা বলা সম্ভব নয়। কলকাতা পরিকল্পিত শহর নয়। কোথাও কোথাও জল ও নিকাশির লাইন এক সঙ্গে রয়েছে। এক-দু’বছর ধরে মেয়র পদে থেকে সবটা পাল্টে দেওয়াও কারও পক্ষে সম্ভব নয়।’’

ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘সংক্রমণ হতে পারে। সংক্রমণের জন্য পেট বা শরীর খারাপও হতে পারে। কিন্তু তার জন্য মৃত্যু হবে, এটা মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর। প্রথম দিনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে দেখা যায়, শ্রমিক আবাসনের জলাধার খুব নোংরা ছিল। আশপাশেও নোংরা ছিল। পরে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা ছিল, কিডনিজনিত অসুখে ভুগছিলেন।’’

Advertisement

জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি মৈনাক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভবানীপুরে অসুস্থতার খবর পাওয়া মাত্রই এলাকার সমস্ত পানীয় জলের পাইপলাইন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এখনও কোনও পাইপলাইনে ছিদ্র পাওয়া যায়নি।’’ মৈনাকবাবু জানান, পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারেরা ভবানীপুর ও তার আশপাশের পাইপলাইনগুলি পরীক্ষা করে দেখে স্থায়ী ভাবে মেরামতির কাজ করবেন। ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত এলাকায় পানীয় জলের গাড়ি পাঠানো হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন এই ব্যবস্থা চলবে।

এ দিকে, ভবানীপুরের শশিশেখর বসু রোড এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে এ দিন নতুন করে কোনও ডায়েরিয়া আক্রান্তের সন্ধান না মিললেও এলাকার বাসিন্দারা যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন। পুরসভার পাইপলাইনে আসা জল আতঙ্কে খাচ্ছেন না তাঁরা। মৃত শিশু আয়ুষির দিদি স্নেহাকুমারী সিংহ এ দিন রাতে বলেন, ‘‘আজ সন্ধ্যাবেলাতেও পাইপে নোংরা জল এসেছে।’’ এ প্রসঙ্গে স্থানীয় পুর কোঅর্ডিনেটর রতন মালাকার বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। জল সরবরাহ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের বলা হয়েছে।’’

এ দিন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল থেকে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের ছ’জন বন্দিকে ছাড়া হয়েছে। এখনও পাঁচ জন বন্দি সেখানে
চিকিৎসাধীন। সংশোধনাগারের বেশ কয়েক জন কর্মীও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ওই সংশোধনাগারে আপাতত পুরসভা জলের গাড়ি পাঠাচ্ছে। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেখানকার জল সরবরাহের পাইপগুলি পাল্টানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement