ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার শারদসম্মান ‘কলকাতাশ্রী’-তে পুরকর্তাদের পুজোর অংশগ্রহণে বুধবার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরিতে তা জরুরি ছিল বলে মনে করেন মেয়র পারিষদেরা। এ বার প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকার পরিচালিত ‘বিশ্ব বাংলা শারদসম্মান’ প্রতিযোগিতায় রাজ্যের মন্ত্রীদের পুজো অংশ নিতে পারবে কি?
রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর বিশ্ব বাংলা শারদসম্মান প্রতিযোগিতা পরিচালনা করছে ২০১৩ সাল থেকে। কলকাতা-সহ রাজ্য, রাজ্যের বাইরের দুর্গাপুজো ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিভিন্ন বিষয়ে যে সব পুজো কমিটি সেরা সম্মান পায়, তাদের ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়। কলকাতা ও রাজ্যের পুজোকে উৎসাহিত করতেই ওই উদ্যোগ।
বিগত কয়েক বছর ধরে দেখা গিয়েছে, বিশ্ব বাংলা শারদসম্মানের পুরস্কার কলকাতার একাধিক মন্ত্রীর পুজো কমিটি পেয়ে চলেছে। যেমন কলকাতাশ্রী পুরস্কারও পেয়েছে একাধিক মেয়র পারিষদের পুজো। স্বভাবতই রাজ্য সরকারের পরিচালনাধীন এই প্রতিযোগিতায় মন্ত্রীদের পুজোর অংশগ্রহণ নিয়ে কথা উঠছে। কলকাতায় যে সব পুজো মন্ত্রীর পুজো বলে পরিচিত— সেই তালিকায় রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলা উদয়ন সংঘ, অরূপ বিশ্বাসের সুরুচি সংঘ, ফিরহাদ হাকিমের চেতলা অগ্রণী সংঘ, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়া এভারগ্রিন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হিন্দুস্থান ক্লাব ইত্যাদি।
সরকারি সূত্রের খবর, শারদসম্মান দেওয়া নিয়ে কলকাতা পুরসভার সিদ্ধান্তের পরে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে মন্ত্রীদের পুজো নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। নবান্নের এক আধিকারিক জানান, এখনও তাঁদের শারদসম্মান নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়নি। কোন পুজো অংশ নেবে, কারা নেবে না— তা ঠিক করার নীতি-নির্ধারক কমিটি রয়েছে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
তা হলে ওই সব মন্ত্রীদের পুজো এ বারে বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মানে অংশ নেবে না?
এ ব্যাপারে প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও পুজো মন্ত্রীর নয়। পাড়ার। আপনারা সাংবাদিকেরা এটা অরূপের পুজো, ওটা ববির পুজো, সুব্রতর পুজো বলে পরিচয় করাচ্ছেন।’’ যদিও তিনি বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে যাঁরা বিচার করছেন, তাঁদেরকেও মাথায় রাখতে হবে মন্ত্রীর পুজো বলে যেন বাড়তি সুবিধা না পায়। মন্ত্রীকে খুশি করার কোনও কারণ নেই। যোগ্যতার বিচারে করা হোক।’’
সুরুচি-র উদ্যোক্তা অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুজো পাড়া বা ক্লাবের। তাতে ২০০-২৫০ সদস্য সারা বছর প্রস্তুতি নিয়ে পুজো করেন। শিল্পীও তাঁর নতুন নতুন থিম তৈরি করে দর্শকদের উপহার দেন। সুস্থ প্রতিযোগিতা আছে বলেই কলকাতার পুজো আকর্ষণীয় সারা বিশ্বে। তাতে উৎসাহিত হন শিল্পীরাও।’’