নারদ কাণ্ড তাঁকে এখনও দুঃখ দেয়, জানিয়েছেন ফিরহাদ গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
২০২১-এর ১৭ মে। বিধানসভা ভোটে তুমুল জয়ের উচ্ছ্বাসের মধ্যে, সে দিনই তাঁকে নারদ কাণ্ডে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। কলকাতার মহানাগরিক তথা রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিন। অ-জানা কথায় এসে এই প্রসঙ্গে অনুশোচনায় দগ্ধ ববি মনে করলেন সেই কালো অধ্যায়ের কথা। পাশাপাশি জানাতে ভুললেন না, বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন, তাই সরাসরি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য নয়। কিন্তু মুখ খুললেন পারিপার্শ্বিক অভিঘাত নিয়ে।
অ-জানা কথায় তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, পিছন ফিরে তাকালে কোনও কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা হয়? জবাবে ফিরহাদ তুলে আনেন নারদ-অধ্যায়ের কথা। ববি বলেন, ‘‘অনুশোচনা এক বারই হয়েছে। আমি ইকবাল আহমেদের কথায় বিশ্বাস করেছিলাম। এক জন বন্ধুকে বিশ্বাস করেছিলাম। এটা আমার জীবনে একটা কলঙ্ক হিসেবে রয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক জীবনে এই কলঙ্কের বড় দাম আমাকে দিতে হয়েছে।’’
নারদ কাণ্ড তাঁকে এখনও দুঃখ দেয়, জানিয়েছেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘যখন একা থাকি নিশ্চিত ভাবে খুব অনুশোচনা হয় যে, আমার নিষ্কলঙ্ক রাজনৈতিক জীবনে একটা কালির দাগ পড়ে গিয়েছে। যেটার জন্য আমি দোষী নই, আমাকে ফাঁসানো হয়েছিল। সেটা সবাই জানে। আমি দেশের আইনে বিশ্বাস করি। জানি। এক দিন না এক দিন সুবিচার পাবই।’’ এই প্রসঙ্গে ফিরহাদের মুখে উঠে আসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কথা। বলেন, ‘‘রাজীব গাঁধী যেমন বোফর্সে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন, আশা রাখি মৃত্যুর আগে আমিও ক্লিনচিট পাব।’’
শুধু রাজনৈতিক জীবন নয়, পরিবারেও এই ঘটনার প্রভাব পড়ে। ফিরহাদের কথায়, ‘‘রাজনীতি করি আর যা-ই করি, সবার আগে আমি তো এক জন মানুষ। আমারও পরিবার আছে। আমি কারও স্বামী, কারও বাবা, কারও দাদু। স্বাভাবিক ভাবে খারাপ তো লাগেই। যখন রাজনীতিতে এসেছিলাম, তখন কিন্তু এই ট্রেন্ড ছিল না যে আমার বিরোধী আমাকে ফাঁসাবে। কোনও দিন এ সব ভাবিনি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এক দিন না এক দিন এর বিচার হবেই। সে দিন আমার নাতনি, আমার মেয়ে আমাকে নিয়ে অহঙ্কার, গর্বটা ফিরে পাবে।’’