তৎপর: দোকানের আগুন নেভানোর কাজ চলছে। রবিবার, কালিন্দীতে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
তিনটি দোকানে আগুন লাগার ঘটনা ঘিরে রবিবার দুপুরে চাঞ্চল্য ছড়াল যশোর রোডে কালিন্দী বাসস্টপের কাছে পাতিপুকুরমুখী লেনে। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় দু’টি দোকান। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ একটি খাবারের দোকান থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ছুটে যান স্থানীয়েরা। আশপাশের দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র বাইরে বার করতে থাকেন কয়েক জন। কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়াতে থাকে। খাবারের দোকানের পাশেই থাকা টায়ারের দোকান এবং ডেকরেটর্সের সামগ্রীতে ভরা দোকানেও তা ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। ঘটনাস্থল থেকে একটি গ্যাস সিলিন্ডার সরিয়ে নিয়ে গিয়ে একটি পুকুরে ফেলা হয়।
খবর যায় দমকল ও পুলিশে। দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে আগুন নেভাতে সমর্থ হন দমকলকর্মীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, স্থানীয় দুই পুরপ্রতিনিধি কৃষ্ণপদ দত্ত ও সুচয়িতা দাস-সহ আরও কয়েক জন। আগুনের জেরে লেক টাউন মোড় থেকে পাতিপুকুরের দিকে গাড়ির গতি শ্লথ হয়।
ঘটনাস্থলের কাছে একটি গুদামে রাখা অসংখ্য থার্মোকলের বাক্স বাইরে নিয়ে গিয়ে রেখেছিলেন স্থানীয়েরা। সেই গুদাম নিয়ে ক্ষোভ জানান তাঁরা। তা নিয়ে সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, এর আগেও সেখানে আগুন লেগেছে। অভিযোগ, ঘটনাস্থলের কাছে ওই জায়গায় অসংখ্য থার্মোকলের বাক্স মজুত ছিল। সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে বড় বিপদ ঘটতে পারত। আগে আগুন লাগলেও দাহ্য পদার্থ মজুতের বিষয়ে সর্তকতা নেই বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের আরও দাবি, রান্নার সময়েই কোনও ভাবে আগুন লাগে। অভিযোগ, সম্প্রতি কেষ্টপুরে রাস্তার ধারে একটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডে দু’জনের মৃত্যুর পরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। রাস্তার ধারের দোকানগুলিতে আগুন জ্বালিয়ে বা সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্না করা হয়। তার আশপাশের অনেক দোকান বা গুদামে দাহ্য পদার্থ মজুত করা থাকে। অথচ পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই সেখানে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক চেয়ারম্যান পারিষদ সঞ্জয় দাস জানান, দোকান বা গুদামগুলিতে উপযুক্ত অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। সেই বিষয়টি কী ভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। এ দিন দমকলমন্ত্রী জানান, ওই খাবারের দোকানে আগুন লেগেছিল প্রথমে। তার থেকে আশপাশের দোকান ও গুদামে আগুন ছড়ায়। তবে আগুন আরও বড় চেহারা নেওয়ার আগে দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। গুদাম ও দোকানে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল বলেই দমকল মনে করছে। ফরেন্সিক তদন্তের পরে আগুন লাগার কারণ স্পষ্ট হবে।