Fire

fire: বসতবাড়িতেই ডালের গুদামে আগুন, আতঙ্ক

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ উল্টোডাঙা থানায় খবর আসে, ওই গুদামে আগুন লেগেছে। খবর যায় দমকলেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৫
Share:

দগ্ধ: আগুন নিভে যাওয়ার পরে সেই গুদাম। বুধবার সকালে, মুচিবাজারে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে পর পর বসতবাড়ি। তারই মধ্যে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে সব গুদাম। গুদামের বস্তার চাপে দখল হওয়া রাস্তায় ছোট গাড়ি ঢুকলে পাশ দিয়ে অন্য গাড়ি যেতে পারে না। উত্তর কলকাতার মুচিবাজারে এমনই ঘিঞ্জি গলি আরিফ রোডের কাছে একটি ডালের গুদামে আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়াল মঙ্গলবার গভীর রাতে। সেই আগুনের নাগাল পেতে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছিল দমকলকর্মীদের। সাতটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় শেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকলের দাবি, অগ্নি-সুরক্ষা মানার বালাই ছিল না গুদামে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, জনবসতির মধ্যে বিধি উড়িয়ে দিনের পর দিন এমন ডাল কল চলে কী ভাবে?

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ উল্টোডাঙা থানায় খবর আসে, ওই গুদামে আগুন লেগেছে। খবর যায় দমকলেও। প্রথমে দমকলের চারটি ইঞ্জিন উল্টোডাঙা মেন রোড দিয়ে ঘটনাস্থল পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টা করেও পারেনি। এর পর ওই দিক দিয়েই কয়েকটি ছোট ইঞ্জিন ঢোকানো হয়। এরই মধ্যে আগুন দ্রুত বাড়তে থাকে। তখন অন্য রাস্তা দিয়ে বড় গাড়ি নিয়ে গুদামের কাছে পৌঁছন দমকলকর্মীরা।

স্থানীয়দের দাবি, এ কাজেই প্রায় আধ ঘণ্টা চলে যায়। তত ক্ষণে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন গায়ে গায়ে লেগে থাকা বাড়ির বাসিন্দারা। রীতিমতো হুলস্থুল পড়ে যায় এলাকায়। এক বাসিন্দার মন্তব্য, ‘‘ঘুমের মধ্যে শুনি আগুন, আগুন চিৎকার। বাইরে তখন কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে গিয়েছে। কোনও মতে নেমে এসে বড় রাস্তার দিকে ছুটতে শুরু করি।’’

Advertisement

এক দমকলকর্মী জানান, ঘুরপথে পৌঁছে রিলে পদ্ধতিতে ওই গুদামে জল দেওয়া শুরু হয়। গুদামের পিছনের উঁচু বাড়ি থেকে আগুনের উৎস লক্ষ্য করে জল ছুড়তে শুরু করেন একদল কর্মী। এর জেরেই নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে আগুন সীমাবদ্ধ রাখা গিয়েছিল বলে তাঁদের দাবি। বুধবার ভোরে আগুন পুরো নিয়ন্ত্রণে এলেও বেলা পর্যন্ত ‘পকেট ফায়ার’ দেখা গিয়েছে। দমকলের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘কী থেকে আগুন লেগেছিল তা স্পষ্ট নয়। তবে ওই গুদামে ন্যূনতম অগ্নি-সুরক্ষার ব্যবস্থা ছিল না।’’ গুদামের মালিক বিদ্যাসাগর গুপ্তের অবশ্য দাবি, ‘‘সমস্ত নিয়ম মেনেই গুদাম তৈরি করেছি। অগ্নি-সুরক্ষার জন্য কী করতে হয় জানি না। পুলিশ বা দমকলও কখনও এসে কিছু বলেনি।’’

এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, গুদাম থেকে বার করা আনা হচ্ছে পোড়া ডাল। তেতলা বাড়ির পিছনের অংশে থাকা ডালের গুদামঘরটি তখন নতুন করে পরিদর্শন
করছিল পুলিশ এবং দমকলের তদন্তকারী দল। জানা গেল, তেতলা বাড়িটিতে সপরিবার থাকেন বাড়ির মালিক। পিছনের গুদামটি তিনি বিদ্যাসাগরকে ভাড়া দিয়েছেন। আগুন লাগার পরে রাতেই অন্যত্র উঠে যান মালিক। ওই এলাকার প্রায় সমস্ত গুদামই ‘শ্রী বিষ্ণু ডাল মিল অ্যাসোসিয়েশনের’ অধীন। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয়কিশোর আগরওয়ালেরও দাবি, ‘‘সব নিয়ম মেনেই গুদামের ব্যবসা চলে। তবু খোঁজ নিয়ে দেখব, কী কী নিয়ম ভাঙা হয়েছে। পুলিশ কোনও নিয়ম আমাদের জানায়নি।’’ উল্টোডাঙা থানার তরফে অবশ্য ওই গুদাম মালিককে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement