অঘটন: একটি এসি ট্রামে আগুন লেগে যাওয়ার পরে নেভাচ্ছেন দমকলের কর্মীরা। শুক্রবার, নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর কাছে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
প্রথমে বিকট আওয়াজ। তার পরেই আগুন লেগে গেল যাত্রী-বোঝাই চলন্ত ট্রামে। শুক্রবার নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর কাছে এ জে সি বসু রোডের এই ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। নামার জন্য তাঁদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। কোনও রকমে সকলে নেমে পড়ায় কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। নিরাপদে নেমে এসেছেন চালক এবং কন্ডাক্টরও। তবে আতঙ্ক কাটছে না যাত্রীদের। এক জনের কথায়, ‘‘কোনও মতে বাঁচলাম।’’
এক কামরার বাতানুকূল ওই ট্রামটি গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলায় যাচ্ছিল। দুপুর ১টা নাগাদ নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর কাছে বাঁ দিকে বাঁক নেওয়ার সময়ে আচমকাই ট্রামটির পিছন দিকে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। স্থানীয় মানুষজন বালি এবং জলের সাহায্যে আগুন নেভানোর কাজে হাত দেন। কলকাতা পুরসভার জলের গাড়ি থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের একটি ইঞ্জিন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দমকল আসতে অনেকটাই সময় লেগে যায়। তার আগেই আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আগুন নেভার পরে ট্রামটিকে ধর্মতলা ডিপোয় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল।
স্থানীয় দোকানদার, প্রত্যক্ষদর্শী মহম্মদ আনোয়ার বলেন, ‘‘প্রথমে ট্রামটির পিছন দিক থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। তার পরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে।’’ ট্রামে আগুন লাগার ঘটনায় এ জে সি বসু রোডে ব্যাহত হয় যান চলাচল।
কিন্তু ট্রামে আগুন লাগল কী করে? ট্রাম কোম্পানি সূত্রের খবর, এসি ট্রামে বাতানুকূল যন্ত্র চালানোর জন্য ডিজ়েল-চালিত জেনারেটর ব্যবহার করা হয়। ট্রামের কর্মীদের একাংশের অনুমান, জেনারেটরের গোলমাল বা এসি-র কোনও সমস্যা থেকে বিপত্তি ঘটে থাকতে পারে। ট্রাম কোম্পানি সূত্রের খবর, ওই ট্রামটির বয়স পাঁচ-ছ’বছরের বেশি নয়। তাই ‘নতুন’ ওই ট্রামে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাতানুকূল ট্রামে সফর করা নিয়ে যাত্রীদের আগ্রহ রয়েছে। বিভিন্ন রুটে ন্যূনতম ২০ থেকে ২৫ টাকা ভাড়া দিয়ে ট্রামগুলিতে চড়া যায়। ভিড়ও হয়। এ দিনের পরে ট্রাম-সফরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।