চেষ্টা: কারখানায় আগুন নেভাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। শুক্রবার, তপসিয়া রোডে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
ইদের আগে তপসিয়া রোডে আগুনে পুড়ে গেল রাসায়নিকে ঠাসা কারখানা।দমকল বিভাগ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে, সময় মতো আগুন নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে তা ছড়িয়ে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কারণ, যে কারখানায় আগুন লেগেছিল, তার একেবারে গা ঘেঁষেই রয়েছে বহুতল আবাসন। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে। তবে ইদের মরসুমে কারখানা জ্বলে যাওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়েরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ আগুন দেখা যায় ৩৫ নম্বর তপসিয়া রোডে। সেখানে রাস্তার উপরে একটি ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ ঘটে। সেটির উপরে ছিল একটি গাছ। গোলার মতো আগুনের ফুলকি এ দিক সে দিক ছিটকে পড়তে থাকে। আগুন ধরে যায় সেই গাছটিতেও। শেখ সিকান্দর নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘গাছটি দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। সেই জ্বলন্ত গাছ থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানার ভিতরে। তার খানিক আগেই শ্রমিকেরা মজুরি নিয়ে হাসিমুখে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, সামনেই ইদ। ফলে কারখানা তখন বন্ধ ছিল। উৎসবের সময়ে এই ঘটনায় সবারই মন খারাপ।’’
দমকলের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ওই কারখানায় চটি তৈরির উপকরণ বানানো হত। রাসায়নিক ঠাসা ছিল কারখানাটিতে। তার চেয়েও ভয়ঙ্কর হল, ওই কারখানার পিছনেও একাধিক কারখানা রয়েছে। পাশেই রয়েছে বহুতল আবাসন। যেখানে বহু মানুষের বসবাস। সামগ্রিক ভাবে তপসিয়া রোডের ওই অংশটি যথেষ্ট জনবহুল। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আগুন জ্বলন্ত কারখানার ভিতরে আটকে রেখে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে। কারণ, পিছনে একাধিক কারখানায় কোনও ভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়লে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বড় হয়েযেতে পারত।’’
উল্লেখ্য, ইদকে কেন্দ্র করে তপসিয়া রোডের ওই জায়গা এ দিন সন্ধ্যা থেকে আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। রাস্তার দু’ধারে পসরা নিয়ে বিক্রিবাটাও চলছিল। ঘিঞ্জি রাস্তায় দমকলের গাড়ি ঢুকতে খানিকটা সমস্যায় পড়ে। আগুন লাগায় অনেকটা এলাকা জুড়ে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা আগুনের লেলিহান শিখা দেখে ভয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
উল্লেখ্য, তপসিয়া-তিলজলার মতো জায়গায় রাসায়নিকে ঠাসা এই ধরনের বহু কারখানা রয়েছে। অভিযোগ, সেই সব কারখানায় হয় অগ্নি নির্বাপক থাকে না, কিংবা তার ব্যবহার কারখানার কর্মীরা করতেই জানেন না। ওই কারখানাটিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আদৌ কতটা ছিল, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল এই তপসিয়া রোডেই একটি ছাপার কারখানায় আগুন লেগে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছিল।