ধাপার জঞ্জালে জ্বলছে আগুন। ফাইল চিত্র
ধাপার জঞ্জালে আগুন লাগানো চলছেই। অভিযোগ, এর পিছনে রয়েছে কাগজকুড়ানিদের দল। যাঁরা কোনও ভাবে ফাঁক গলে ধাপায় ঢুকে জঞ্জালে আগুন লাগাচ্ছেন। কারণ, জঞ্জালের মধ্যে অনেক ধাতব এবং অন্য জিনিস থাকে। সেগুলি তাঁরা অন্যত্র বিক্রি করে টাকা পান। সে কারণেই আগুন লাগিয়ে জঞ্জাল পুড়ে গেলে ওই সব জিনিস আলাদা করেন কাগজকুড়ানিরা। তাই চেষ্টা করেও ধাপায় আগুন লাগানো বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের একাংশের।
ধাপার জঞ্জালে আগুন শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে, তা নিয়ে এর আগে একাধিক বার বিতর্ক হয়েছে। সে কারণে ওই আগুন নেভানোর জন্য ধাপার কাছাকাছি জলের ট্যাঙ্কও মজুত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু তার পরেও কেন আগুন লাগা বন্ধ করা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিবেশ আদালতে বায়ুদূষণের মামলাটি ওঠার কথা। বৃহস্পতিবারই সে বিষয়ে পরিবেশ আদালতে হলফনামা জমা দিয়েছেন ওই মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত।
হলফনামায় সুভাষবাবু জানিয়েছেন, ধাপার জঞ্জালে বারবার কেন আগুন লাগছে জানতে তিনি ধাপা পরিদর্শন করেছিলেন। সুভাষবাবুর দাবি, কী ভাবে ধাতব বা অন্য জিনিস সংগ্রহ এবং তা পৃথকীকরণের জন্য জঞ্জালে আগুন লাগান কাগজকুড়ানিরা, তা তিনি জানতে পারেন পুর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে। তাঁর কথায়, ‘‘ধাপায় ঢোকার ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো না-হলে এমন চলতেই থাকবে। তাই নজরদারি যাতে বাড়ানো হয়, হলফনামায় সেই আবেদনই করেছি।’’
যদিও কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বিষয়টি মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ধাপার মূল প্রবেশপথ দিয়ে কেউই সেখানে ঢুকতে পারেন না। গ্রামের দিক থেকে কোনও ভাবে হয়তো সেখানে লোকজন ঢুকে পড়েন। কিন্তু তাঁরা জঞ্জালে আগুন লাগান না। মেয়র পারিষদের কথায়, ‘‘মিথেন গ্যাস থেকেও অনেক সময়ে আগুন ধরে যায়। ওখানে কেউ আগুন লাগান না।’’
তবে শুধু ধাপার জঞ্জাল নয়, শহরের বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ যে রাস্তার ধুলোও, এর আগে একাধিক সমীক্ষায় তাও ধরা পড়েছে। রাস্তার ধুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার’ গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ছ’টি ‘ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার’ গাড়ি রয়েছে। যার মাধ্যমে নিয়মিত জল দেওয়া হয় রাস্তায়। কিন্তু সুভাষবাবুর বক্তব্য, কলকাতা পুর এলাকায় সব মিলিয়ে রাস্তার দৈর্ঘ্য যেখানে প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার, সেখানে পুরসভার কাছে ওই জলের গাড়ি যতগুলি রয়েছে, তা সংখ্যায় নগণ্য। তিনি বলেন, ‘‘ওই ক’টি জলের গাড়ি দিয়ে শহরের মোট রাস্তার দৈর্ঘ্যের পাঁচ শতাংশেও জল দেওয়া সম্ভব নয়!’’